একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বয়কট করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। নির্বাচনের নামে যে প্রহসনের খেলা চলছে, তাতে দেশবাসীকে শামিল না হওয়ার অনুরোধ জানান বিএনপির নেতারা।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের দিন সকালে প্রথমে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এবং পরে শেরে বাংলা নগর দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের কাছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ড. আব্দুল মঈন খান এই ডাক দেন।

নজরুল ইসলাম দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, নির্বাচনের নামে যে খেলা চলছে তাতে কেউ যুক্ত হবেন না। এই ভোট দেওয়ার কোনো অর্থ নাই। মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মর শান্তির জন্য এই নির্যাতনকারী অগণতান্ত্রিক জোর করে ক্ষমতায় আসীন সরকারের পতন ঘটানোর যে ঐক্যবদ্ধ লড়াই, এই লড়াইয়ে সবাই শামিল হোন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলের সাফল্য নিশ্চিত। জোর করে কিছুদিন ক্ষমতায় থাকা যায়, কিন্তু চিরদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না… গেলে হিটলার-মুসোলিনরাও ক্ষমতায় থাকত। থাকে নাই, থাকে না এই সরকারও ক্ষমতায় থাকবে না। বাংলাদেশে ইনশাল্লাহ আবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। একবার শহীদ জিয়াউর রহমানের হাতে হয়েছে, একবার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতে হয়েছে… এবার ইনশাল্রাহ তারেক রহমানের হাতে হবে। এই বিজয়ের দিনে আমরা আশা করি, প্রত্যাশা করি- বাংলাদেশ থেকে স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদী সরকারের অবসান হবে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বিপর্যয়, সামাজিক অবক্ষয় ও গণতন্ত্রহীন সমাজ ব্যবস্থার জন্য আওয়ামী লীগের দায়ী করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান।

তিনি বলেন, বিজয় দিবসে এসে যদি একটি নাম উচ্চারণ করতে হয় সেই নামটি হচ্ছে বীর উত্তম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। একাত্তরের মার্চের কালো রাত্রে যখন আওয়ামী লীগ একটি পলায়নপর রাজনৈতিক দল, সেই সময়ে পাক হানাদার বাহিনী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ৫ কোটি নিরীহ মানুষের ওপর হায়নার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন শহীদ জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ‘আই রিভোল্ট; বলেছিলেন, আই টু হিয়ার বাই ইন্ডিপেন্ডন্স অব বাংলাদেশ…’ অন্য  কেউ বলেন নাই। সেই কঠিন সত্য, ইতিহাসের সত্য আজকে সবাই স্বীকার করে নিয়েছে।

আজকে আমাদের প্রশ্ন করতে হবে— আওয়ামী লীগ যে সরকার চালাচ্ছে তারা স্বাধীনতার কোন আদর্শকে ধরে রাখতে পেরেছে, সেই প্রশ্ন আজকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে জিজ্ঞাস করতে হবে। সরকার কী করেছে? মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ গণতন্ত্র সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করে সেই একদলীয় বাকশাল একবার কয়েম করেছিল, এখন আবার অলিখিত নব্য বাকশাল বাকশাল-টু কায়েম করেছে। পাশাপাশি তারা কি করেছে?

তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে পরাধীনতায় পরিণত করেছে। সরকার একটা ভুয়া নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করছে। এই ভুয়া নির্বাচনে যেটা তারা করেছে সেটার নাম হচ্ছে ভোট ভাগাভাগি। এখানে কোনো নির্বাচন নাই।

আজকে আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছি। এই আন্দোলনকে সরকার বন্দুক, মামলা, হামলা, গুম-খুন দিয়ে প্রতিহত করছে। কেননা তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, ক্ষমতায় কারো জন্য চিরস্থায়ী নয়। কোনো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে দেয় নাই।’

এনএম/এসএম