ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকার প্রার্থী বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শাহজাহান ওমরের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনির বলেছেন, কে হেভিওয়েট, কে হেভিওয়েট না, সেটা জনগণ ব্যালটে ঠিক করবে। অন্য দল থেকে এসে নৌকা পাওয়া প্রার্থীকে হেভিওয়েট মনে করি না।

মঙ্গলবার(১২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান মনির। কিন্তু বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শাহজাহান ওমর পান এ আসনের নৌকা প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করে দিলে নির্বাচনের ঘোষণা দেন ২২ বছর ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় মনির। তবে প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে প্রার্থিতা হারান তিনি। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে। আজ আপিল শুনানিতে ফিরে পেয়েছেন প্রার্থিতা।

মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ২০০৮ সাল থেকে আমি দলের কাছে মনোনয়ন চেয়ে যাচ্ছিলাম। ২০ থেকে ২২ বছর সরাসরি আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। কিন্তু দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। এলাকাবাসী, দলীয় নেতাকর্মীদের চাপের কারণে ও দলের পজিটিভ চিন্তার কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি মনোনয়নপত্র তুলেছি।

আপনার এলাকায় নৌকার মনোনয়ন যিনি পেয়েছেন তিনি তো হেভিওয়েট প্রার্থী– সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কে হেভিওয়েট, কে কম ওয়েটের প্রার্থী সেটা জানি না, আমি তো ছোটখাটো মানুষ। আমার ওজন কম হতেই পারে। যে লম্বা-চওড়া, তিনি তো হেভিওয়েট হতেই পারেন। কিন্তু চিন্তা বা বিবেচনার বিষয় হওয়া উচিত পলিটিক্যালি আমি কতটুকু কমিটেড। আমি আদর্শিক কি না, দলের প্রতি, জনগণের প্রতি কমিটেড কি না।

শাহজাহান ওমরকে ইঙ্গিত করে মনির বলেন, ৪৫ বছর ধরে একটি দলের রাজনীতি করলাম, হঠাৎ অন্য দলে এসে নির্বাচনে অংশ নিলাম। আমি কোনো সাংঘর্ষিক বক্তব্য দিতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। তবে তার বাইরে দলের সিদ্ধান্ত, দলীয় কোনো মনোনয়নপ্রত্যাশী চাইলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারবেন। সেই জায়গায় আমি জনগণ, দলীয় নেতাকর্মীদের চাপে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আমি প্রত্যাশা করি, আগামী ৭ জানুয়ারি জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে রায় দেবেন কে হেভিওয়েট আর কে হেভিওয়েট প্রার্থী না।

তিনি বলেন, মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য যারা কাজ করেন তারাই আসল হেভিওয়েট প্রার্থী। বর্তমানে বড় সংখ্যা হলো আমরা মানুষের জন্য, জনগণের জন্য দেশের জন্য কাজ করি না। শঙ্কা বা সংকটে থাকি না কিন্তু সুবিধা নেওয়ার জন্য কোনো না কোনোভাবে কারো দ্বারস্ত হই। সেখান থেকে আমাদের ফিরে আসতে হবে। রাজনীতিটা রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হাতে নিয়ে আসতে হবে।

দল থেকে বা নৌকা প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোনো চাপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো চাপে নেই। দল সুযোগ দিয়েছে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার। নির্বাচনটা উৎসবমুখর, অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহিত করা উচিত।

জেইউ/এসএসএইচ