সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এমনিতেই শেখ হাসিনার আত্মীয়-স্বজন ও দলের লোকেরা এতো টাকা বিদেশে পাচার করেছে যে, তাদের চৌদ্দ জেনারেশন বসে বসে খেতে পারবে।    

শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দমনে হত্যা নিষ্পেষণ এবং প্রতিবেশী দেশের স্বার্থে এই সর্ববৃহৎ শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রিজভী। তিনি বলেন, শ্রম অধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন শ্রমনীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রায় অবধারিত বলে আশঙ্কা করছেন মালিকরা। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, গতকাল পোশাক খাতে আতঙ্কের বিষয়টি মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞা এলে বিদেশিরা পণ্য নেবে না। ইতোমধ্যে পণ্যের আদেশ দাতারা এমন শর্ত জুড়ে দিয়েছেন ঋণপত্র খোলার সময়। এমনকি পণ্য জাহাজীকরণের পর নিষেধাজ্ঞা এলেও পণ্য নেবে না তারা।” ইতোমধ্যে এ খাত ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ব্যবসা হারিয়েছে। পোশাক শিল্পের মালিকদের ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে উদ্ভট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বালখিল্য প্রদর্শন করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বললেই পোশাক রপ্তানি বন্ধ হবে না। নিষেধাজ্ঞা দিলে কিছুই হবে না।

রিজভীর দাবি, জনগণ বিশ্বাস করে রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসায় এখন অন্য দেশের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধ ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি চায় শেখ হাসিনা। 

একতরফা নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে। এই পাতানো নির্বাচন কেবল বয়কট নয় গণ-প্রতিরোধের মাধ্যমে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে একটা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচনের নামে তামাশা পুরোদমে চলছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা শুনে ক্ষিপ্ত প্রধানমন্ত্রী, খড়গ হাতে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ‘আদার বনে শিয়াল রাজার মতো’ ছুঠে বেড়াচ্ছেন। তিনিই সব, তাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, যারা সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের কথা বলে তাদের তিনি ব্যক্তিগত দুশমন হিসেবে বিবেচনা করেন। আর সেজন্য বিরোধী দলের অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির আন্দোলন দমাতে নানা পন্থা অবলম্বন করেছেন যেগুলো নির্মম-পৈশাচিক।

রিজভী বলেন, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের পর রিমান্ড, জার্মানির ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের’ অতাচারের কাহিনীকেও হার মানাবে। দল পরিবর্তনের জন্য কারান্তরীণ গণতন্ত্রকামী রাজনীতিবিদদের চরম অসম্মানজনকভাবে তাদের সম্মতি আদায়ের জন্য জুলুম করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। রিমান্ডে নির্যাতন করে তরুণ নেতা-কর্মীদের মিথ্যা সাক্ষ্য আদায়ের চেষ্টা চলছে।

এএইচআর/এসএম