তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিচার বন্ধ করার মধ্যদিয়ে। দায়মুক্তি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করা হয়েছিল। সেটি জিয়াউর রহমানের হাত দিয়েই হয়েছিল। এরপর বাংলাদেশে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৭ সালে নির্বিচারে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের হত্যা করার মধ্য দিয়ে।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিচার ছাড়া হত্যাকাণ্ড। এমনও ঘটনা ঘটেছে, যে ব্যক্তি অভিযুক্ত তিনি না, নামের মিল থাকায় আরেক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। সেই ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি চিৎকার করেছেন, আমি সেই ব্যক্তি না। কিন্তু কে শোনে কার কথা! উপরের নির্দেশে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এমন ঘটনাও ঘটেছে, ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। আর রায় হয়েছে পরে। দিজ আর ডকুমেন্টেড (এগুলো নথিভুক্ত)। জিয়াউর রহমানের এডিসি হিসেবে যিনি কাজ করতেন, তিনি নিজে বলেছেন, জিয়াউর রহমান যখন সকালের নাস্তা করতেন, তখন তিনি এই ফাইলগুলো নিয়ে যেতেন এবং নাস্তা করতে করতে সেগুলোতে সই করতেন। এমন ঘটনাও আছে, জিয়াউর রহমান বিদেশ যাচ্ছেন, প্লেনে ওঠার সিঁড়িতে ওঠার আগে মৃত্যু পরোয়ানায় সই করতেন।’

‘২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যেভাবে নির্বিচারে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা সমসাময়িক বিশ্বের কোথাও ঘটেনি রাজনীতির নামে। এগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন। ২০০৪ সালে একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মী ও দুজন অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫০০ জন। সেই হামলার পর বিচারবিভাগীয় তদন্ত করে গাঁজাখুরি রিপোর্ট, আর পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ তার সংসদ সদস্যদের হাস্যরস, এগুলো সব মানবাধিকার লঙ্ঘন।’

তিনি বলেন, আজ যে মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, চালক পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে, চোরাগোপ্তা হামলা করা হচ্ছে, এগুলো কী মানুষের অধিকার লঙ্ঘন না? সুতরাং তাদের নিয়ে আগামী ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে এবং যারা মানবাধিকারের কথা তুলে বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায়, আর ফিলিস্তিনে যখন নারী-শিশুদের পাখি শিকারের মতো হত্যা করা হয়, গাজায় হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিয়ে একসঙ্গে ৫০০ মানুষকে হত্যা করা হয়। সাধারণ মানুষের ওপর বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে, তাদের কর্ণকুহরে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশে যারা মানবাধিকার বঞ্চিত হয়েছে, তাদের নিয়ে সমাবেশ করবো। আর বিএনপি কী করবে, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে আগে মানুষ হত্যা করছে, যাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে দল প্রতিষ্ঠা করেছে, তারা নিজেরাই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী।’

এমএম/এসএম