আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একেবারেই ত্রুটিমুক্ত বা পারফেক্ট ডেমোক্রেসি পৃথিবীর কোথাও রয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা মনে করি গণতন্ত্রের জন্য এমন একটা স্বাধীন অবস্থা আমরা তৈরি করতে পেরেছি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায়। তার রাজনৈতিক যে অবস্থান, এ অবস্থান অবশ্যই তার আওতায় পড়ে। গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করার জন্য শেখ হাসিনার যে সংগ্রাম সে সংগ্রাম বৃথা যায়নি। গণতন্ত্র একেবারেই ত্রুটিমুক্ত, পারফেক্ট ডেমোক্রেসি পৃথিবীর কোথাও রয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি আমাদের গণতন্ত্রের রাজপথের এক অকুতোভয় বীর। গণতন্ত্রই ছিল তার সারা জীবনের ব্রত। গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই করেছেন। আন্দোলন করেছেন। পাকিস্তানিদের দ্বারা বারবার নির্যাতিত হয়েছেন, জেলে গেছেন, নিগৃহীত হয়েছেন। এ গণতন্ত্র বলতে বলতেই বৈরুতে নির্জন হোটেল কক্ষে তার মৃত্যু হয়েছে। আজও রহস্য রয়ে গেছে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যু স্বাভাবিক কি না। অনেকে মনে করেন অস্বাভাবিক অবস্থায় বিদেশের এক হোটেলে নিঃসঙ্গ অবস্থায় তার জীবনাবসান হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর গণতান্ত্রিক পথ অনুসরণ করে বাঙালির স্বাধিকার সংগ্রাম করেছি। স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত সেটাও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যে পথ দেখিয়ে গেছেন সেটাকে অনুসরণ করেই হয়েছে। বঙ্গবন্ধু নিজেও সোহরাওয়ার্দীর শিষ্য বলে দাবি করতেন।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে, গণতন্ত্র থাকবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচন হচ্ছে। এই নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রাণ। এই গণতন্ত্রের জন্যই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী আজীবন সাধনা করে গেছেন। আমরা তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করছি। তার প্রদর্শিত পথে আমাদের গণতন্ত্রের সংগ্রাম আরো এগিয়ে নিয়ে যাব। গণতন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত করে পারফেক্ট ডেমোক্রেসি প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা নিরলসভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লড়াই চালিয়ে যাব। আজকের দিনে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

কাদের বলেন, ২১ বছর তো এদেশে মিলিটারি ডিক্টেটরশিপ ইলেকশন ডেসট্রয় করে দিয়েছে। গণতন্ত্র ছিল না। ২১ বছর ছিল স্বৈরতন্ত্র, ডিক্টেটরশিপ ও তাদের ল্যাগাসি শাসন করেছিল। গণতন্ত্রের যে যাত্রা এই যাত্রায় গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করার জন্য যিনি ছিলেন সবার অগ্রভাগে, নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দীর্ঘ সংগ্রামে স্বেচ্ছায় নির্বাচন থেকে এসে। ৭৫ এর ছয় বছর পর এদেশে ফিরে এসে তার প্রথম কাজই ছিল গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করা। সংগ্রাম তিনি করে গেছেন। সেই সংগ্রামের জন্য তিনি আপসহীনভাবে লড়ে গেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এই পথ মসৃণ নয়। এই পথ অনেক জটিল পথ। আমাদের দেশে আজকে সাম্প্রদায়িক শক্তি, জঙ্গিবাদী শক্তি গণতন্ত্র সমর্থন করে না। আজকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে বয়কট করছে এবং প্রতিহত করার জন্য অবরোধ ডাকছে, হরতাল ডাকছে। এরা তো গণতান্ত্রিক শক্তি নয়। আজকের এই দিনে গণতন্ত্রের যে লড়াই শুরু হয়েছে। গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার যে লড়াই আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুরু হয়েছে সে লড়াইকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যাব। গণতন্ত্র পরিপূর্ণ হবে, ত্রুটিমুক্ত হবে। পরিপূর্ণতা পাবে, ম্যাচুরিটি পাবে। সে লক্ষ্যে আমরা সংগ্রাম করে যাচ্ছি।

এমএসআই/এসএম