ওবায়দুল কাদের
নির্বাচন যারা বাধাগ্রস্ত করছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসা উচিত
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসা উচিত। এসব বিষয়ে তো সভ্য দেশগুলো কিছু বলছে না।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে বাংলাদেশের একটা দল এবং তার দোসররা এখন হরতাল ডাকছে, অবরোধ করছে। তারা প্রকাশ্যে হামলা করে পুলিশ হত্যা করেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করেছে, এসব কর্মকাণ্ড যারা করছে, তারা তো নির্বাচনকে বাধা দেওয়ার জন্য করছে। আমাদের সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করছে। আমাদের গণতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করছে। আমাদের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছে। এটার কোনো প্রতিঘাত নেই।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, এটা কী আন্দোলন? এটাতো নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা। নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসার কথা। এসব যে চলছে, এ ব্যাপারে কারো কোনো কথা নেই, সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ অনেক বিষয়ে কথা বলে, কিন্তু এখানে নীরব কেন?
তিনি আরও বলেন, তারা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধা দিচ্ছে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বাধা দিচ্ছে, তারা গাড়ি পোড়াচ্ছে, তারা ট্রেনে হামলা করছে, তারা প্রতিনিয়ত গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, বাসে অগ্নিসংযোগ, এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।
বিএনপি অবরোধ কার বিরুদ্ধে করছে প্রশ্ন রেখে সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা হরতাল ডাকছে কার বিরুদ্ধে, এটা তো নির্বাচনের বিরুদ্ধে, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এসব কর্মকাণ্ড করছে।
তিনি বলেন, আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলে, বাংলাদেশের সুশাসনের কথা বলে, যারা ফ্রি ফেয়ার নির্বাচনের কথা বড় গলায় বলে, তারা আজকে একটা পক্ষের এসব অপকর্ম, গণতন্ত্রবিরোধী, সংবিধান বিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কেন নীরব। এটা নিয়ে তো কেউ কিছু বলছে না। নির্বাচনকে যারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, যারা বাধা দিচ্ছে, তাদের ব্যাপারে তারা কেন নীরব। আমাদের দেশে যারা সুশীল সমাজ যারা মানবাধিকারের কথা বলে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন।
কাদের বলেন, আমরা শুনেছিলাম আন্তর্জাতিকভাবে, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে এমন কোনো কর্মকাণ্ড হলে, সেটা নির্বাচন বিরোধী কর্মকাণ্ড বলে বিবেচিত হওয়ার কথা। এখন তো সবাই নীরব। এখন কেউ কিছু বলে না। ইউরোপও কিছু বলে না, আমেরিকাও কিছু বলে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হরতাল অবরোধকে কি কোনোভাবে ঢেকে রাখা যায়? পুলিশ হত্যাকে কী কোনোভাবে ঢেকে রাখা যায়? প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করছে, এগুলো কী অন্ধকারে ঢেকে রাখা যাবে? এগুলো তো প্রকাশ্যে হচ্ছে। আজকের বিশ্বে এখানকার খবর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে যেতে কতক্ষণ লাগে? এখানকার কোনো খবর ল্যাটিন আমেরিকার কোনো দেশ বা দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো দেশে পৌঁছতে কি দেরি হচ্ছে? ওয়াশিংটনের পৌঁছতে কি দেরি হচ্ছে? এসব নিয়ে তো কোন কথা আমরা শুনছি না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা অপকর্ম করেছে, শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা তো হবে। আপনি প্রকাশ্যে পুলিশকে খুন করেছেন, সেটার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না? তাদেরকে জেলে পাঠানো হবে না? এটা কোন সভ্য দেশ আছে।
তিনি আরো বলেন, একটি পক্ষ নিজেরাই নির্বাচনের বাইরে আছে। কেউ তাদেরকে বাইরে রাখেনি। আমরা বারবার বলে যাচ্ছি, আমরা চাই না কেউ নির্বাচনের বাইরে থাকুক। আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ইলেকশন চাই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অনেক কিছুর সঙ্গে বিদেশির ইন্ধন আছে। কোনো বিশেষ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংবিধানে একটি সময়সীমা আছে, সেই সময়সীমা অতিক্রম করে তফসিল পরিবর্তন আমরা কখনো সমর্থন করব না। সময়সীমাকে অতিক্রম করবে এমন কোনো পদক্ষেপ, এমন কোনো পরিবর্তন আমরা সমর্থন করব না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
এমএসআই/এমজে