ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক না হলে গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। তাই বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণা করা উচিত।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি আয়োজিত ‘আবারও সাজানো নির্বাচন: নাগরিক উৎকণ্ঠা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সরকার নির্বিচারে মামলা, গ্রেপ্তার ও সাজা দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণের সুযোগ রুদ্ধ করছে।

বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুসারে ডিসেম্বরের শেষ দিকে সংসদ ভেঙে দিলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ রয়েছে। তার মতে, ‘সিরিয়ার আসাদ মডেলে’ এ দেশে বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করা হচ্ছে। এ অবস্থা কোনোভাবে সমর্থন করার মতো নয়। তিনি বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানান।

আলোচনার সভাপতিত্ব করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, এখন যে নির্বাচনের পরিকল্পনা হচ্ছে, তা শুধু নিয়ন্ত্রিত বা সাজানো নয়, তা একতরফা নির্বাচন। সঠিক ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে ভোটারদের যথার্থ বিকল্প বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দরকার।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ অভিযোগ করে বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর সব শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ভয়াবহ একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মুখোশ পরে বাড়ি বাড়ি হামলা করা হচ্ছে, পুলিশ কিছু করছে না। তিনি বলেন, শুধু ভোট নয়, মজুরি, শিক্ষা আর স্বাস্থ্যের কথা বলতে গিয়েও মানুষ এখন নির্যাতিত হচ্ছে।

আনু মোহাম্মদ বলেন, সরকার সব সময় বলছে, তারা খুবই জনপ্রিয় এবং জনগণ তাদের সঙ্গে আছে। তাহলে তো সরকারের এমন একটি অবস্থা তৈরি করা উচিত, যাতে জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারে।

নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা শিরিন হক বলেন, ‘সংলাপ নিয়ে সরকারের ধারাবাহিক উপেক্ষা দেখে বোঝা যায় একতরফা নির্বাচনের মানসিকতা তাদের অনেক আগে থেকেই ছিল। তাদের এ পরিকল্পনা দেখে আমরা ভীত, তরুণসমাজ হতাশাগ্রস্ত।’

আলোচনার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনের আয়োজন ২০১৮ সালের চেয়েও নগ্ন, বেপরোয়া ও উদ্ধত। এ নির্বাচনের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট ঘনীভূত হবে। আর এ নির্বাচনকে সমর্থনকারী দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি অন্যায্য সুবিধা নেওয়ার সুযোগ পাবে।

ওএফএ/পিএইচ