# প্রতিটি আসনেই নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী
# দলের সভাপতির ঘোষণায় ভরসা
# অর্ধশতাধিক নেতা ইতোমধ্যে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন
# মনোনয়ন-বঞ্চিত অনেক এমপি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮ আসনে একজন করে প্রার্থী দিয়েছে দলটি। বিগত জাতীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার কড়া নির্দেশনা থাকলেও এবার তার বিপরীত নির্দেশনা রয়েছে দল থেকে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের নির্বাচনে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবার।

একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে দলের হাইকমান্ড স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সহযোগিতার নিদের্শ দিয়েছেন। আবার দলের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাতেও আপত্তি নেই, নেওয়া হবে না কোনো ব্যবস্থাও। হাইকমান্ডের এমন নিদের্শনায় ভরসা পেয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিচ্ছেন অনেক নেতা। ইতোমধ্যে নৌকার বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন বহু আওয়ামী লীগ নেতা। কেউ কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে রেখেছেন। সারা দেশের প্রতিটি আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ছড়াছড়ি হতে পারে এবার।

আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন ঘোষণা করেছে। তবে জোটের সঙ্গে অনেক হিসাব-নিকাশ বাকি রেখেছে দলটি। কারো সঙ্গে জোট করবে নাকি এককভাবে সব দলকে নির্বাচনের সুযোগ দেবে, সেটা নিয়ে এখন চলছে দর কষাকষি। আওয়ামী লীগ যদি জোটে নির্বাচন করে তাহলে অনেক আসনে নৌকার প্রার্থীর কপাল পুড়তে পারে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— শেষ পর্যন্ত যদি ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে কৌশলগত ঐক্য হয় তাহলে বেশ কিছু আসন ছেড়ে দিতে হবে। যেমন, রাশেদ খান মেননের জন্য কোনো আসন রাখা হয়নি। যদি জোট হয় তাহলে তাকে একটি আসন দিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে জোটের অন্য বড় নেতাদের জন্যেও আসন ছাড়তে হবে আওয়ামী লীগকে

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— শেষ পর্যন্ত যদি ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে কৌশলগত ঐক্য হয় তাহলে বেশ কিছু আসন ছেড়ে দিতে হবে। যেমন, রাশেদ খান মেননের জন্য কোনো আসন রাখা হয়নি। যদি জোট হয় তাহলে তাকে একটি আসন দিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে জোটের অন্য বড় নেতাদের জন্যেও আসন ছাড়তে হবে আওয়ামী লীগকে।

এদিকে নৌকার মাঝি হতে পারেননি এমন অনেক হেভিওয়েট রাজনীতিবিদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেকে মনোনয়নপত্রও নিয়েছেন। সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনেকে বিজয়ী হবেন বলে মনে করছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল।

গত ২৬ নভেম্বর মনোনয়নপ্রত্যাশীরা গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বেশ কিছু নির্দেশনা দেন। নির্বাচনে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দলীয় প্রার্থীদের সাবধান করেন তিনি। একইসঙ্গে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশন দিয়ে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করার কথে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও প্রতিযোগিতামূলক করতে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা অন্য দলের কেউ প্রার্থী হলে তাকেও সহযোগিতা ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য বলেছেন শেখ হসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতির এমন নিদের্শনার পর দলের মনোনয়নবঞ্চিতদের অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা দিচ্ছেন। এ তালিকায় আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও দলের বিভিন্ন জেলার পরিচিত নেতারা। 

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার বলেন, নির্বাচনে দলীয় নেতারা চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতেই পারে। কৌশলগত কারণে দলের প্রয়োজনেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

অনেকে আবার শেখ হাসিনার নির্দেশনাকে একটু ভিন্নভাবে দেখছেন। দলটির মাঠ পর্যায়ের একাধিক নেতা মনে করছেন, এবার নির্বাচন উন্মুক্ত হবে। তাই ইউনিয়ন পরিষদ বা উপজেলা নির্বাচনের মতো এখানেও প্রচুর স্বতন্ত্র প্রার্থী দেখা যাবে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নিজেদের দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকবে বেশি।

তৃণমূল নেতারা বলছেন, প্রতি আসনে গড়ে নৌকার প্রার্থী হতে মনোনয়ন চেয়েছিলেন ১১ জন। নৌকা পেয়েছেন একজন। বাকি ১০ জন এখন কী করবেন? তাদের অন্তত একজন হলেও নির্বাচন করার সম্ভাবনা আছে। তাই সারা দেশের সবগুলো আসনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগই হতে যাচ্ছে। নৌকাবঞ্চিত অনেকেই লড়বেন নৌকার বিপক্ষে।

স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে গেলে এক শতাংশ ভোটারের সম্মতিপত্র লাগে। প্রার্থী হওয়ার জন্য ওই স্বাক্ষর সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন এমন নেতারা।

এদিকে বর্তমান অনেক সংসদ সদস্য নৌকার মনোনয়ন থেকে এবার বঞ্চিত হয়েছেন। তারাও স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের যেসব নেতা

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) জাফর আলম। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ।

সংসদ সদস্য জাফর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে (সালাউদ্দিন আহমেদ) উনি নৌকাকে তিনবার ডুবিয়েছেন। তার কোনো যোগ্যতা নেই। এই আসনটি আমি বিএনপি-জামায়াতের হাত থেকে উদ্ধার করেছি। বিএনপি নেতারা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য আমি নির্বাচন করব। এই আসনে আমি স্বতন্ত্র থেকে হলেও জয়লাভ করে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চাই।

ঢাকা-৫ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন হারুনুর রশিদ মুন্না। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন হাবিবুর রহমান মোল্লার জ্যেষ্ঠপুত্র মশিউর রহমান মোল্লা সজল। 

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ঢাকা-৫ আসনের ১১টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা আমাকে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের অনুরোধেই নির্বাচন করছি। কারণ নেতাকর্মীদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে, আমি তো তাদের নিয়ে কাজ করি।’

হবিগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাহবুব আলীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত মুখ আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন

ফরিদপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আরিফুর রহমান।

আরিফুর রহমান তার ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াইয়ের অনুমতি দিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কৃতজ্ঞতা। প্রধানমন্ত্রী বললেন- স্বতন্ত্র দাঁড়াতে কোনো অসুবিধা নেই। তৈরি থাকুন ফরিদপুর-১ আসনের জনগণ। আপনারাই শক্তি।’

ফরিদপুর-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া। সেখানে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহদাব আকবরের নাম ঘোষণা করা হয়।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এ কে আজাদ। এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হককে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

ফরিদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহকে।

গোপালগঞ্জ-১ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান। সেখান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান সংগঠনের সভাপতি মেহেদী হাসান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘গণতন্ত্র সুসংগঠিতকরণে শেখ হাসিনা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সব দলের অংশগ্রহণ, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনের সুযোগ। এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা দিয়েছি। তিনি (শেখ হাসিনা) নির্বাচনকে সুন্দর করার জন্য যে সুযোগ দিয়েছেন, এই জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।’

হবিগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাহবুব আলীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত মুখ আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। এবার তার বদলে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তবে মাঠ ছাড়ছেন না সামশুল হক। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবছেন তিনি

সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। সরওয়ার হোসেন এই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে তিনি নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

সুনামগঞ্জ-১ আসনে তিনবারের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রনজিত চন্দ্র সরকার। তবে রতন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে নৌকার টিকিট না পেয়ে স্বতন্ত্র পদে তিন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ এবং তার ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শহিদুল্লাহ শহীদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান। এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মাহবুবুর রহমান।

মাদারীপুর-৩ (কালকিনি, ডাসার ও সদরের একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও মহিলা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম।

চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। এবার তার বদলে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তবে মাঠ ছাড়ছেন না সামশুল হক। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবছেন তিনি।

রাজবাড়ী-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়তে চান রাজবাড়ী সদর উপজেলার টানা চারবারের চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক বিশ্বাস।

চাঁদপুর-১ আসনে এবার নৌকা পেয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ড. সেলিম মাহমুদ। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন

মানিকগঞ্জ-২ আসনে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের হাতেই রয়েছে নৌকার বৈঠার দায়িত্ব। তবে এ আসনে স্বতন্ত্র হয়ে লড়বেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল।

যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে এবার প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন চিকিৎসক তৌহিদুজ্জামান তুহিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনির।

রংপুর-৬ আসনে আবারও নৌকা পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। নৌকা না পেয়ে এখান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম। ইতোমধ্যে তিনি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

চাঁদপুর-৪ আসনে আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক ভুঁইয়া।

চাঁদপুর-১ আসনে এবার নৌকা পেয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ড. সেলিম মাহমুদ। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে নৌকা পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মো. শাহজাহান আলম। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মঈনউদ্দিন মঈন।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী। এ আসনে নৌকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানীও। এখানে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ওমর ফারুক

নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে এবার নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন মোশতাক আহমেদ রুহী। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত জালাল উদ্দিন তালুকদারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ঝুমা তালুকদার।

কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনে নৌকার টিকিট পেয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান সাংসদ মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভুঁইয়া, তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার নাঈম হাসান।

কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সাংসদ সেলিমা আহমাদ মেরী। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছেন হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ ও মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল আলম।

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সাংসদ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার।

কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনে নৌকার মাঝি হয়েছেন বর্তমান সাংসদ রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।

কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট হাশেম খান। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপন।

কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সাংসদ ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। এ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন প্রয়াত সাংসদ অধ্যাপক আলী আশরাফের পুত্র চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু।

কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন কিছুদিন আগে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ পাওয়া এসকিউ গ্রুপের চেয়ারম্যান এ.জেড.এম শফিউদ্দিন শামীম। এ আসনে প্রয়াত সাবেক চারবারের সাংসদ আব্দুল হাকিমের ছেলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মইনুল হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।

কুমিল্লা-১১ ( চৌদ্দগ্রাম) আসনে নৌকার মাঝি হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হক। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী। এ আসনে নৌকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানীও। এখানে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ওমর ফারুক।

রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনে দলীয় প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বিপক্ষে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক এমপি রায়হানুল হক। রায়হানুল রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি

রাজশাহী-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা। তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তবে দারার সঙ্গে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়তে চান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ।

রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনে দলীয় প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বিপক্ষে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক এমপি রায়হানুল হক। রায়হানুল রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনে দলীয় প্রার্থী ডা. শামিল উদ্দিন শিমুল ছাড়াও বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন সাবেক এমপি ও কানসাট বিদ্যুৎ আন্দোলনের নেতা গোলাম রাব্বানী এবং উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর তালিকায় আছেন সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস। 

এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. গোলাম রাব্বানী, জয়পুরহাট-১ (সদর-পাঁচবিবি) আসনে সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল আজিজ মোল্লা, নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনে উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনে জাহিদুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এমএসআই/এমজে