বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ২০১১ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনীর পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর কোনো শান্তি নেই। চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অস্থিরতা সৃষ্টির কারণ স্রেফ জোর করে ক্ষমতায় থাকা বলেও তিনি দাবি করেন।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অনেকে বলেন, সময় নেই, এটা তো ঠিক নয়। সময় এখনো আছে। প্রধানমন্ত্রী এখনো সে পথ তৈরি করতে পারেন। যদিও সরকারের উচিত ছিল আরও আগে আলোচনা করা, সংলাপ করা। জনআকাঙ্খা অনুযায়ী একটা নির্বাচনের আয়োজন করা উচিত।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সভাপতিত্বে জাতীয় সংলাপে নজরুল ইসলাম বলেন, আজকের জাতীয় সংলাপ বহুবছর স্মরণে থাকবে। কোনো বিশিষ্ট আলেম রাজনৈতিক বিষয়ে এরকম কোনো সংলাপের আয়োজন করে বলে মনে পড়ে না। আমরা যারা একসঙ্গে রাজপথে আন্দোলনে আছি। তাদের অনেকেই আসছি। অনেকেই আসেননি। তবে আমরা বিরোধীরা সবাই এখানে আছি। ডান, বাম সবাই।

সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, সরকারের অত্যাচার জুলুমের কারণে আজকে আমরা সবাই নিপীড়িত, মজলুম। যেকারণে আজকে আমরা এককাতারে, ঐক্যবদ্ধ। আজকের ঐক্য নিপীড়িতদের। তবে চরমোনাইকে উপস্থিত সবার আকাঙ্ক্ষা পূরণে উদ্যোগী হতে হবে।

সংসদ বাতিল করে নির্বাচন দেওয়া নিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, এখনো যদি আজকের প্রধানমন্ত্রী ২৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতিকে বলেন আপনি সংসদ বাতিল করেন। নতুন নির্বাচন দেন। জানুয়ারির ২৯ তারিখের আগে যদি সংসদ ভেঙে দেওয়া হয় তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা যাবে। এতে কোনো বাধা নেই। সময় আছে তো! সময় নেই এটা তো ঠিক নয়।

উন্নয়ন ও গণতন্ত্র নিয়ে তিনি বলেন, এ সরকার এখন সবচেয়ে যেটা বেশি বলে সেটা হলো গণতন্ত্রের আগে উন্নয়ন। উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র। খুব বড় বড় উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা দেখছি। কিন্তু প্রত্যেকটাতেই বড় বড় দুর্নীতি হচ্ছে। যে দেশে মানুষ না খেয়ে থাকে, সুবিচার পায় না, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়, মানবাধিকারের ঘাটতি আছে সেদেশে উন্নয়ন কোনো কাজে আসে না।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ, অন্যায়কারী, অপরাধীদের ধরা পড়লেই অনেক কিছুর দাম কমে আসবে। এজন্য দরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে সেটা সম্ভব নয়।

সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গোলাম মাওলা রনি, পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের যুগ্ম-আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহ-সভাপতি রাশেদ পলাশ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার।

জেইউ/পিএইচ