আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির কেউ কেউ নির্বাচনে আসতে পারেন। কেউ কেউ প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট ৩০ তারিখ, কাল বাদে পরশু। এর মধ্যেই তো পরিষ্কার হয়ে যাবে কারা আসলেন আর কারা আসলেন না। 

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বিদ্রোহী প্রার্থীর ব্যাপারে নমনীয় থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির কারা আসে, সবকিছু দেখে আমরা আমাদের কৌশল নির্ধারণ করবো। 

নির্বাচন জোটবদ্ধভাবে হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা কারা কারা প্রার্থী সেটা আমরা আগে দেখি। আমাদের হাতে কিন্তু সময় আছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত, আমাদের হাতে সময় আছে। এর মধ্যে আমরা অবজার্ভ করবো, মনিটর করব, এডজাস্টমেন্ট করবো, একোমোডেট করবো। ডেমু ক্যান্ডিডেটের বিষয়টা ১৭ তারিখের মধ্যে ফাইনালাইজড হয়ে যাবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন ফ্রি স্টাইলে হবে না। আমরা দেখি কারা কারা চাইছে। এর মধ্যে আমাদেরও একটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত আছে। সে সিদ্ধান্তের জন্য ১৭ তারিখ পর্যন্ত হাতে সময় আছে। এর মধ্যেই আমরা পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন, সংযোজন, একোমোডেশন সব কিছু করতে পারি। 

একেক আসনে একেক কৌশলে আওয়ামী লীগ যাবে কি না—  এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলের কৌশল তো থাকবেই। আমরা ইলেকশন করছি, আমরা একটা রাজনৈতিক দল আমাদের কৌশলগত দিক তো থাকবেই। 

বিএনপিকে নির্বাচনে আনার কোনো কৌশল আওয়ামী লীগের আছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আনার কৌশল আমাদের নেই। তারা আসলে আমাদের আপত্তি নেই। তারা আসলে স্বাগতম।

নির্বাচন নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও সিইসির মন্তব্যের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে- দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে মন্তব্য করছে। বিদেশি বন্ধুরাও এখানে পরিস্থিতি অবজার্ভ করছে। ইতোমধ্যে ১০০ পর্যবেক্ষক আসবে এমন আভাস আমরা পাচ্ছি। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। এখানে নানা মানুষের নানা মত থাকবেই। আমাদের টার্গেট হলো একটা পিসফুল, ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশন করা। ইলেকশন চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কথা বলতে পারে। এখন আল্টিমেটলি আমরাও একটা পিসফুল ইলেকশন দিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিতে চাই- আমরা ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। তারপর অনেক সমালোচনায় হয়ত বন্ধ হয়ে যাবে। এখনো অনেকে সমালোচনা করছেন, অনেকে স্পেকুলেশন করছেন, জল্পনা-কল্পনা করছেন। এসব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটবে যখন নির্বাচনটা সুন্দরভাবে হয়ে যাবে। আর সিইসি কি বলছেন সেটা আপনি সিইসিকে জিজ্ঞেস করুন। সিইসি স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। সিইসির মন্তব্যের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।

জোটের সঙ্গে সমঝোতা হলে কি করবেন— এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা কথা বলি— আমরা ৩০০ আসনেই নৌকা দেব। অ্যাডজাস্টমেন্ট যখন হবে তখন ছেড়ে দেব। কোনো অসুবিধা নেই। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে আসায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, যদি তারা নির্বাচনে অংশ না নেই তখন আবার একটি অংশগ্রহণহীন নির্বাচন হতে যাচ্ছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনি প্রথমেই নেগেটিভ ভাবছেন কেন? পজিটিভও থাকতে পারেন। পরে আমরা যখন ডিসিশান নেব তখন আপনি দেখবেন আমরা কি ডিসিশান নেই। সেটার উপর আপনি মন্তব্য করতে পারেন।

প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যাপারে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের যে আচরণবিধি আছে সে আচরণবিধি কেউ যেন লঙ্ঘন না করে। নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধির পরিপন্থি কোনো কিছু করা যাবে না।

এমএসআই/এমজে