জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি মুহাম্মদ কামাল হোসাইন বলেছেন, নির্বাচনী তফসিল হয় উৎসবমুখর পরিবেশে। অথচ তফসিল হয়েছে তামাশার ও ভীতির। এই নির্বাচনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের কবর রচনার নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে আউয়াল কমিশন।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) শনির আখড়ায় অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য শাহজাহান খান, মাওলানা আমিরুল ইসলাম, মাওলানা বাইজিদ হাসান, অ্যাডভোকেট একে আজাদ, জামায়াত নেতা মাহফুজুর রহমান ও ছাত্রনেতা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

কামাল হোসাইন বলেন, জনগণের আস্থা নেই বলে পুলিশ- প্রশাসনের মাধ্যমে একটি ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তফসিল ঘোষণা করতে হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশের জন্য এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। সরকার ও নির্বাচন কমিশন মিলে দেশের গণতন্ত্রের কবর রচনা করার একটি নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে। জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় এই প্রহসনের তফসিল মেনে নেবে না। 

তিনি বলেন, দেশের নির্বাচন একটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়। সকল দলের অংশগ্রহণে সারাদেশে একটি উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। কিন্তু এই ফ্যাসিবাদী সরকার জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন করে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করতে চলেছে। 

জনবিচ্ছিন্ন হয়ে প্রশাসন নির্ভর নির্বাচন করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় বল প্রয়োগ তাদের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মত উৎসবমুখর বিষয়কে তামাশা ও ভীতিকর বিষয়ে পরিণত করা হয়েছে। এই নির্বাচনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই।

তিনি আরও বলেন, এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে জনগণের  কাঙ্ক্ষিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অবিলম্বে জনধিকৃত ও প্রহসনের তফসিল বাতিল করুন, দেশ-জাতি জনগণের বৃহৎ স্বার্থে ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। অন্যথায় জনগণের রোষানলে আপনাদের কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।

পঞ্চম দফায় ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর শনির আখড়া, মতিঝিল, খিলগাঁও, বনশ্রী, গেন্ডারিয়া ও জুরাইন রেলগেইট এলাকায় অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের নেতাকর্মীরা।

মতিঝিল এলাকায় অবরোধ

রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. মু. আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আবু আম্মার, গিয়াস উদ্দিন, এস এম শামসুল বারী, মুতাসিম বিল্লাহ ও নুর উদ্দিন সহ জামায়াত এবং ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

অধ্যাপক ড. মু. আবদুল মান্নান বলেন, সারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ তফসিল ঘোষণার পরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। নির্বাচন কমিশনকে বলছি, আপনাদের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। আপনারা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে অধিকাংশ জনগণের মতের বিপরীত কাজ করছেন। তাই অবিলম্বে এই প্রহসনের তফসিল বাতিল করে নিজেরা পদত্যাগ করুন, না হলে দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গণবিস্ফোরণে পরিণত হবে। 

লাগাতার হরতাল, অবরোধসহ  সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এই একতরফার তফসিল প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন সংগ্রাম চলছে, চলবে।

খিলগাঁও বনশ্রী সড়ক অবরোধ 

রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় রামপুরা-বনশ্রী সড়ক অবরোধ করে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আবদুস সালামের নেতৃত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আব্দুল্লাহ আল আমিন, মো. শাহজাহান, মোহাম্মদ আলী, সাজেদুর রহমান শিবলী, আবু মুয়াজ, খিলগাঁও পূর্ব থানা সেক্রেটারি এডভোকেট এস এম খোকন, মধ্য থানা সেক্রেটারি খোরশেদ আলম মজুমদার সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

গেন্ডারিয়া রেল স্টেশন অবরোধ

রাজধানীর গেন্ডারিয়া রেলস্টেশন অবরোধ করে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামরুল আহসান হাসানের নেতৃত্বে মিছিল ও অবরোধে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সূত্রাপুর-ওয়ারী-গেন্ডারিয়া জোনের বিভিন্ন থানা সেক্রেটারি ও থানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। 

সেখানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

শ্যামপুর জুরাইন রেলগেইট অবরোধ

তফসিল বাতিল ও অবরোধের সমর্থনে রেল লাইন অবরোধ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। শ্যামপুর জুরাইন রেলগেইট এই অবরোধ করে তারা। ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ এর মজলিসে শূরা সদস্য মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর মজলিস এ শুরা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, হেলাল উদ্দিন ও ডা, রফিকুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

জেইউ/এমএসএ