মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে চিঠির বাইরেও রাজনীতি এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেছেন, চিঠির বাইরেও সমসাময়িক রাজনীতি এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে। সেগুলো আনঅফিসিয়াল কথা। 

সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় পার্টির বনানীর চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন চুন্নু। 

চুন্নু বলেন, রাজনৈতিক বিষয়ে তো কথা হয়েছে, সেইগুলো আনঅফিসিয়াল। মতবিনিময় হয়েছে, সৌজন্য কথাবার্তা হয়েছে। এছাড়া অনেক কথাবার্তা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত তাদের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লুয়ের লেখা একটা চিঠি নিয়ে এসেছেন। তিনি চিঠিটা আমাদের পার্টির চেয়ারম্যানকে হস্তান্তর করেছেন।

আরও পড়ুন

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দেওয়া চিঠি পড়ে বৈঠকে উপস্থিত সবাইকে জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন চুন্নু। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে এখানে(বাংলাদেশ) অবাধ,সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় তা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। 

বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জাতীয় পার্টি কি জানিয়েছে— এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুন্নু বলেন, এটা তো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদেরকে কেন জানাবো? বাংলাদেশের জনগণের দাবি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।

পিটার হাসের সঙ্গে যে আনঅফিসিয়াল কথাবার্তা হয়েছে তা এখানে (গণমাধ্যমে) বলার কিছু নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জাপা মহাসচিব বলেন, নির্বাচন অংশ নেবো কিংবা নেবো না— এই বিষয়টি এখনো বলি নাই এই কারণে যে, আমরা এখনও অপেক্ষা করছি সরকার একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করবেন। মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। তাহলে আমরা নির্বাচনের বিষয়ে চিন্তা করবো। আগামীকাল মঙ্গলবার দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভা দিয়েছি। প্রয়োজনে পরের দিন দলের প্রেসিডিয়ামের মিটিং ডাকবো, সেখানে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে একটা সিদ্ধান্তে আসবো।

নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি জাতীয় পার্টি নিয়ে রেখেছে বলে উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, প্রার্থী তালিকা তৈরি করা, পার্টির ইশতেহার— এইগুলো কাজ করে রেখেছি। কিন্তু এখন যেহেতু কয়েকদিন সময় আছে, সরকারও তফসিল ঘোষণা করে নাই, আমরা জেলার নেতাদের কাছ থেকে নির্বাচন বিষয়ে কথা শুনবো, তারপর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হওয়া দুটি উপনির্বাচনে ভোটের প্রসঙ্গ টেনে চুন্নু বলেন, আমি মনে করি না সেখানে আমাদের প্রার্থীর জয়ী হওয়ার সম্ভবনা ছিল। কিন্তু তারপরও আমরা প্রতিযোগিতা করেছি। কিন্তু সেখানে কি সিল মারা বন্ধ ছিল? ছিল না। ফলে, উপনির্বাচনে আমাদের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। তাই আমরা বারবার বলছি, মানুষ যেন ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই পরিবেশ নেই।  

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যবসায়িক অংশীদার উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একক একটি রাষ্ট্র, সেখানে আমরা গার্মেন্টসের প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করি। তাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক ও উন্নয়নমূলক সম্পর্ক আছে। তারা একটি চিঠি দিয়েছে, সেটাকে গুরত্বপূর্ণ বলবো না। তবে তারা শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে এখানে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চান, সেটা চাইতে পারে। কিন্তু নির্বাচন কীভাবে হবে সেটা আমাদের নিজস্ব বিষয়।

এএইচআর/এমজে