অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে দেশ ভয়াবহ সংঘাতে নিপতিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে পল্টনে সংগঠনটির দলীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফয়জুল করীম বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য বর্তমান সময় মোটেও অনুকূলে নয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে আর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আয়োজন করলে আজীবন গণধিকৃত হয়ে থাকবে। দলবাজ প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) রুখে দেবে জনগণ।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি না করে এবং নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা কী হবে তা নির্ধারণ না করে কোনোভাবেই তফসিল ঘোষণা হতে পারে না। এ ধরনের চেষ্টা থেকে দলবাজ ও দলান্ধ নির্বাচন কমিশনকে বিরত থাকতে হবে। এ অবস্থায় একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে চরম কাণ্ডজ্ঞানহীন পদক্ষেপ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধাত্মক অবস্থান থেকে বিএনপিসহ বিরোধীদের ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি করছে, তা কোনোভাবেই একটি নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের সহায়ক হতে পারে না।’ 

‘দেশে আর একটি নীলনকশার পাতানো নির্বাচন জনগণ কোনোভাবেই মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। জনগণ প্রয়োজনে রক্ত ও জীবন দিয়ে তা প্রতিহত করবে। সরকার ও সরকারি দল যদি তারপরও জবরদস্তি করে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের পাঁয়তারা অব্যাহত রাখতে চায়, তাহলে সিইসিসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারদের কাজ হবে নৈতিক ও বিবেকের দায় নিয়ে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন থেকে সরে দাঁড়ানো। তারা সরে না দাঁড়ালে আর একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করলে নির্বাচন কমিশনকেও এর দায়ভার নিতে হবে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর বলেন, ‘দেশ ও দেশের মানুষ কোনোভাবেই আর একটি ব্যর্থ, অকার্যকর ও তামাশার নির্বাচনের দায় নিতে পারবে না। গত ৫ নভেম্বর দেশের দুইটি আসনে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষীপুর-৩) উপনির্বাচনে আবারও নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ব্যাপক অনিয়ম, কারচুপি ও ব্যালট পেপারে সিল মারাসহ পেশিশক্তির প্রদর্শন করা হয়েছে। এই কোমরভাঙা ও দলান্ধ কমিশন কীভাবে জাতীয় নির্বাচনের মতো একটি নির্বাচন করতে পারে? কাজেই অথর্ব নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশারফুল আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, শ্রমিক নেতা হাফেজ মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির।

জেইউ/কেএ