গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, সরকার নিজেদের এজেন্ট দিয়ে নানা ধরনের পরিকল্পিত সন্ত্রাস করে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপিয়ে দিচ্ছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপে সরকার দিশেহারা হয়ে গেছে। তারা একতরফা নির্বাচন করতে চায়।

রোববার (৫ নভেম্বর) দুপুর রাজধানীর পল্টনে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধের সমর্থনে গণতন্ত্র মঞ্চের মিছিল শেষে সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন করাই এখন সরকারের একমাত্র লক্ষ্য। আপনারা সবাই জানেন কি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। সেই ভোটাধিকার ও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সারা দেশের মানুষ  শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমাবেশে ষড়যন্ত্র করে, নিজেদের এজেন্ট ঢুকিয়ে পরিকল্পিতভাবে এমন সহিংসতা তৈরি করেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়ির ফটকে হামলা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা, পুলিশ হাসপাতালে গাড়িতে আগুন দেওয়া এইসব ঘটনা নিজেদের এজেন্ট দিয়ে ঘটিয়ে পরিকল্পিত উসকানি তৈরি করা হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ এর সমস্ত দোষ দিলেন বিরোধীদলের ওপর। দোষ চাপিয়ে আজকে সমস্ত আন্দোলনের ওপরে একটা ভয়াবহ ক্র্যাকডাউন তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত শতশত নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তারা ভেবেছে দমন নিপীড়ন করলে কিংবা সমস্ত বিরোধী দলের নেতাদের জেলে ঢুকিয়ে দিলে তারা একতরফা নির্বাচন করতে পারবেন। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই সারা বিশ্বের এবারের বাংলাদেশের ইতিহাস বলে দমন পীড়ন করে, হামলা-মামলা করে, গুম করে হত্যা করে গণজাগরণকে দমন করা যাবে না। বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য জেগে উঠেছেন তাদেরকে দমন করা যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী আইন লঙ্ঘন করেছেন উল্লেখ করে সাকি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে তিনি সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে নেতাকর্মীদেরকে আইন হাতে তুলে নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে এটি শুধু শপথ ভঙ্গ নয় বরং তিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ এই সব বক্তব্যের বিচার করবে।  বাংলাদেশের ইতিহাস কেন পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো স্বৈরশাসকও এই ভাষায় কথা বলেন না। কিন্তু আজ বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য যে উন্নয়নের নাম করে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম করে যা ইচ্ছা তা করা হচ্ছে।


 
যতক্ষণ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ লড়বে। তাই আমি বাংলার মানুষকে জেগে ওঠার জন্য আহ্বান জানাই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, ভাসানী অনুসারী পরিষদ আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

আরএইচটি/এমএ