বিএনপি শূন্য করতে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, গ্রেপ্তার থামছে না। দেশের জাতীয় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত, ইউনিয়ন পর্যন্ত গ্রেপ্তারের যে হিড়িক চলছে, যে ধারা চলছে সেটা ভাষায় বলা যাবে না। আক্রমণে আক্রান্ত হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনাও কিন্তু থামছে না।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৬ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বিভিন্ন মামলায় ৫৭৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৭১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মোট মামলা হয়েছে ৫০৬টির বেশি, মোট আসামি ৩৮ হাজার ৫৬০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের আর আহত হয়েছে ৫ হাজার ৭৮০ জন।

‘তিনি একতরফা নির্বাচন চান’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী থাকার যে কি স্বাদ সেই তো তিনি পেয়েছেন। সেই স্বাদের কারণে তিনি (শেখ হাসিনা) অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে চান না। দরকার হলে আরও যদি রক্ত ঝরাতে হয়, রক্ত ঝরিয়ে হলেও তিনি একতরফা নির্বাচন করবেন।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণই নাকি তার মূল শক্তি। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিজে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিচ্ছেন না কেন? জনগণ সঙ্গে থাকলে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে ভয় পাচ্ছেন কেন?

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, কেন আপনি নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মসূচিতে নৃশংস হামলা চালিয়ে শীর্ষ নেতাদের কারান্তরীণ করেছেন? কেন আপনি দেশব্যাপী ব্যাপক ধড়পাকড় করছেন বিএনপিসহ তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। নেতাকর্মীদের ধরতে গিয়ে বাসায় না পেয়ে তাদের বাবা, ভাইকে আটক করেছে। আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দলীয় ক্যাডাররা রক্তাক্ত আক্রমণ চালিয়ে নেতাকর্মীদের হত্যা ও বিপুল সংখ্যক মানুষকে জখম কেন করছে? আপনি এতটাই বিধ্বংসী হয়ে উঠেছেন যে দেশব্যাপী ধড়পাকড় করে ভীতির পরিবেশ তৈরি করছেন।

‘৭১ সালের অবস্থা বিরাজ করছে’

রিজভী বলেন, বিএনপিকে বল প্রয়োগে উৎখাতের পরিকল্পনা নিয়েছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে এখন একাত্তরের ভয়াল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। একাত্তরে হানাদার বাহিনীর হিংস্রতা ও দুঃশাসন হুবহু নকল করছে আওয়ামী সরকার। তাদের শান্তি কমিটির মতো এখন আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করছে।

তিনি অভিযোগ করেন, হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের না পেলে তাদের পরিবারের লোকদের ধরে নিয়ে যেত। আওয়ামী পুলিশ সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করছে। ছেলেকে না পেলে তার ভাইকে, ভাইকে না পেলে তার বাবাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সারা দেশ থেকে এই অমানবিক, মনুষ্যত্বহীন সংবাদ প্রতিনিয়ত আমাদের শুনতে হচ্ছে।

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, উদ্ভট গায়েবি মামলার নতুন নতুন মডেল দেখতে পাচ্ছি। ঢাকাতে গ্রেপ্তার যুবদলের নেতা মামুনের বিরুদ্ধে বরিশালে ককটেল নিক্ষেপের মামলা করা হয়েছে। যখন সে ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছে তার বেশ কিছুদিন পরে মামলা দিয়েছে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে।

এএইচআর/এসএসএইচ