ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, দেশের সরকার যখন যা খুশি করবে আর এ দেশের জনগণ নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবে তা হতে পারে না। ২০১৪ আর ১৮ সালের মতো সাজানো নির্বাচন এ দেশে আর হতে দেওয়া হবে না।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

রেজাউল করিম বলেন, আজ তিন নভেম্বর। আজ সরকারের মেয়াদ শেষ। এ কারণেই আজকের দিনকে মহাসমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করেছি।

তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বাংলাদেশের এই মহাসমাবেশ আজ মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আমি চিন্তিত ছিলাম চলমান রাজনৈতিক সংকট এবং বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর যে দমন-পীড়ন এবং রাস্তাঘাটে বাধা দেওয়া হচ্ছে তাতে আমাদের এই মহাসমাবেশে আপনারা আসতে পারেন কি না। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি, আমার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। আমার মন বলছে, ইসলামী আন্দোলন যে দাবি নিয়ে মাঠে এসেছে সেই দাবির সঙ্গে আল্লাহর রহমত রয়েছে, এই মহাসমাবেশ সেটিই প্রমাণ করে।

রেজাউল করিম বলেন, আজ বাংলাদেশে একটা মেসেজ চলে গেছে, ন্যায্য দাবি আদায়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পেছনে দৌড় দেওয়ার মতো দল নয়। জালিমের অত্যাচার সহ্য করে পিছু হটা দল ইসলামী আন্দোলন নয়। যদি জালিমের জুলুম এই বাংলাদেশের ন্যায় প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঘাম কিংবা রক্ত ঝরাতে পিছু হটবে না। আমরা হাজার ভয়ভীতি আর বাধার মধ্যেও দাবি আদায়ে প্রস্তুত।

দলটির আমির বলেন, আজ বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার সংসদে চেপে বসে আছে। বাংলাদেশের মতো একটি সুন্দর দেশকে অসুন্দর দেশে পরিণত করার চক্রান্ত করছে। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ধ্বংস করার নীলনকশা করেছে। আমি আওয়ামী সরকারকে বলে দিতে চাই, আপনারা যা মন চায় তা করবেন আর দেশের মানুষ তা বসে বসে দেখবে এবং নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবে তা হবে না। সেই ১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচন বাংলার জমিনে আর মানুষ হতে দেবে না। আমি আওয়ামী লীগ সরকারকে জানাতে চাই, আজ বাংলাদেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এ দেশের মানুষ আজ এক দফা দাবিতে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। জনগণের এ যৌক্তিক দাবির বিরোধিতা যারা করবে তারাই এ দেশের শত্রু।

দলটির শীর্ষ এ নেতা বলেন, পাকিস্তান সরকার যখন নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করেছিল তখন  এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বঙ্গবন্ধু লাখ লাখ মানুষকে নিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। আজ তিন নভেম্বর, আজই সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সে কারণে আমরা আজকের তারিখ মহাসমাবেশ করার জন্য নির্ধারণ করেছি। সেই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই আজ আমরা পরিষ্কার ঘোষণা করছি, যদি অংশগ্রহণমূলক ও জাতীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না দেন, তাহলে সামনে অশনি সংকেত অপেক্ষা করছে।

এর আগে জুমার নামাজের পর মহাসমাবেশ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

তার আগে সকাল ১০টা থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে নেতাকর্মীদের ভিড়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে।

বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতির প্রবর্তন ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবিতে এ সমাবেশ করছে দলটি।

এমএম/এসএসএইচ