রাজধানীর নয়াপল্টনের ভিআইপি রোডের ২৮/১ নম্বর হোল্ডিংই হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কার্যালয়। যদিও কার্যালয়ের কলাপসেবল গেট বন্ধ ও ঝুলছে তালা, তবুও এই কার্যালয় ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। আশপাশ মিলিয়ে রয়েছেন আরও অসংখ্য সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, একটু পরপর হুইসেল বাজিয়ে যাচ্ছে টহল পুলিশের গাড়ি, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকের দুই দিকে দুই দলে বিভক্ত হয়ে অস্ত্রসজ্জিত অবস্থায় নিয়োজিত আছে অসংখ্য পুলিশ। সেইসঙ্গে এই কার্যালয়ের আপাশে কাউকেই একটুও দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। 

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। এদিন সকাল থেকে কার্যালয়ের সামনে বা আশপাশে বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি।

বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের টিম সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখানে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা শিফটিং করে ডিউটিতে নিয়োজিত আছেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দুইদিকে তারা অবস্থান নিয়ে ডিউটি করছেন। এছাড়া স্ট্যান্ডবাই পুলিশ সদস্যরা এখানে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।

পাহারায় অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যদের কিছুটা সামনে বিজয়নগরের দিকের সড়কে দাঁড়িয়ে ছিল বেশ কিছু অটোরিকশা ও রিকশা। এদের মধ্যে রিকশাচালক মকবুল হোসেন বলেন, বিএনপি অফিসের সামনে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ওইদিক সবাই যেতে পারছে, কিন্তু দাঁড়াতে পারছে না। আমি যাত্রী নামিয়ে ওখানে একটু দাঁড়ানোর সাথে সাথে পুলিশ আমার দিকে তেড়ে এসেছে। পরে দ্রুত আমাকে সেখান থেকে চলে যেতে বললে আমি চলে এসেছি। আর এখান থেকেই দেখা যাচ্ছে শত শত পুলিশ সেখানে, অন্য কাউকেই তারা ওই রাস্তায় দাঁড়াতে দিচ্ছে না।

বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিক বিপরীত সড়কের পাশের দোকানি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, হরতাল-অবরোধের প্রথম দিন থেকেই এখানে শত শত পুলিশ ২৪ ঘণ্টায় দায়িত্ব পালন করছে। তবে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীদের এই তিন চারদিন এদিকে আসতে দেখা যায়নি। এখানে সারাদিন শুধু পুলিশ ও সাংবাদিকদের দেখা যায়।

গত ৩১ অক্টোবর সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। তিন দিনের এ অবরোধ কর্মসূচি আজ ২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) শেষ হচ্ছে।

গত শনিবারের মহাসমাবেশ পণ্ড এবং সেখানে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যার হরতাল পালন করে বিএনপি ও জামায়াত। এরপর গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন, ৩১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা অবরোধ পালন করবে বিএনপি ও এর শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ। 

অন্যদিকে, সারা দেশে তিন দিনের (৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর) সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে তিন দিনের এ কর্মসূচি কীভাবে পালন করা হবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানায়নি বিএনপি কিংবা অন্যান্য দলগুলো।

এএসএস/কেএ