২০ শর্তে ঢাকায় মহাসমাবেশের অনুমতি পেল ইসলামী আন্দোলন
আগামী ৩ নভেম্বর (শুক্রবার) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবিতে ডাকা মহাসমাবেশ করতে দলটিকে অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তবে মহাসমাবেশ করতে হলে ডিএমপির ২০টি শর্ত মানতে হবে তাদের।
বুধবার (১ নভেম্বর) ডিএমপির কমিশনারের পক্ষে বিশেষ সহকারী মোহাম্মদ নাজমুর রায়হানের সই করা লিখিত স্মারকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরীকে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
ডিএমপির ২০টি শর্তে বলা হয়, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০ শর্ত যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে ৩ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো।
যে ২০ শর্ত মানতে হবে
১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লিখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. অনুমোদিত স্থানের মধ্যেই সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫ . নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশে আসা ব্যক্তিদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. অনুমোদিত স্থানের বাইরে রাস্তা বা ফুটপাতের কোথাও লোক সমবেত হতে পারবে না।
৭. আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
৮. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে বাগচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
৯. আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি সমাবেশে বক্তব্য প্রদান বা তার কোনো বক্তব্য সমাবেশে প্রচার করা যাবে না।
১০. সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১১. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (সকাল ১০ টা হতে বিকেল ৪টা) সমাবেশের কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১২. সমাবেশ সমাপ্তির পর প্রস্থানের সময় রাস্তায় কোথাও কোনো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বা অবস্থান করা যাবে না।
১৩. মূল সড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৪. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৫. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
১৬. উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
১৭. সমাবেশে ব্যানারের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি-সোঁটা বা রড সদৃশ কোনো বস্তু ব্যবহার করা যাবে না।
১৮. আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
১৯. উল্লিখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২০. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।
চিঠির অনুলিপি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস, ট্র্যাফিক) ও যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস), উপ-পুলিশ কমিশনার (মতিঝিল বিভাগ, ট্র্যাফিক-মতিঝিল, অপারেশনস), বিশেষ পুলিশ সুপার, নগর বিশেষ শাখাকে অবহিত করা হয়েছে।
মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন কাল
অন্যদিকে মহাসমাবেশ কর্মসূচির অনুমতির পর সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টায় পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (নোয়াখালী টাওয়ার, তৃতীয় তলা) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে দলটি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মহাসমাবেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে বক্তব্য রাখবেন মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই।
জেইউ/কেএ