বিএনপিসহ বিরোধী দল শূন্য করতে সরকার মরিয়া : রিজভী
‘বিএনপিসহ বিরোধী দল শূন্য করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও দেশের নানা জায়গায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ, আবার কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ যুক্তভাবে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবির পক্ষে স্লোগান দেওয়া নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে নির্বিচারে। ব্লক রেইড চলছে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়। রিমান্ড আর গ্রেপ্তার এ যেন আওয়ামী দুঃশাসনের অন্যতম পণ্য।
রিজভী বলেন, সরকার গোটা দেশকে বিএনপি শূন্য করা, বিরোধী দল শূন্য করার; এমনকি গণতন্ত্র শূন্য করার জন্য যত ধরনের পদ্ধতি দরকার সেটি তারা করে যাচ্ছে। ওরা মরিয়া হয়ে এই কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলকে স্তব্ধ করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেড় দশকের আওয়ামী লুণ্ঠন ও অর্থপাচারের কাহিনিগুলো যেন সাধারণ জনগণ জানতে না পারে।
রিজভী আরও বলেন, দেশব্যাপী যে জুলুম নিপীড়নের খড়ক নেমে এসেছে গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপরে, যারা বাকস্বাধীনতা চায়, যারা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে চায়, যারা গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চায়… আজকে তারা মরণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সেজন্য আমরা তাদের অভিনন্দন জানাই।
ব্রিফিংয়ে বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী ‘রাজপথ-রেলপথ-নৌপথ অবরোধ’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে দলের নেতা-কর্মীদের ওপরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণ, হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরেন রিজভী।
তিনি বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে মোট গ্রেপ্তার ২৫৬৩ জনের বেশি, মোট মামলা ৫৫টির অধিক, মোট ৩৪৩৬ জনের অধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা। একজন সাংবাদিকসহ ৯ জনের মৃত্যু। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মোট গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪২৮৩ জনের অধিক নেতা-কর্মী, মিথ্যা মামলা হয়েছে ৮০টির অধিক।
‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর নিষ্ঠুরতা বেড়েছে’ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে বিবেকহীন পুলিশ বাহিনী বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাতে আরও বেশি উৎসাহী হয়ে ওঠে। ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ অক্টোবর আওয়ামী পুলিশ রক্তের যে হোলিখেলা খেলেছে সেটি নজিরবিহীন পৈশাচিক ঘটনা। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) গণভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে অনর্গল মিথ্যা কথা বলেছেন সারা জাতির সামনে। অথচ দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, যা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন সেটিকে খণ্ডাবেন কী করে? জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বলেছে যে, মুখোশ পরা হেলমেটধারী ব্যক্তিরা সরকারের লোক। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের সংস্থা, মানবাধিকার সংস্থা, রাইটস গ্রুপ… জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন তারা পর্যন্ত বলছে মুখোশ পরা হেলমেটধারীরা সবাই সরকারের লোক।
কারাগারেও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, জেলখানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের দুর্দশা এখন চরমে উঠেছে। বিএনপির যে সমস্ত নেতা যারা একসময় মন্ত্রী-এমপি ছিলেন তাদেরও ডিভিশন দেওয়া হচ্ছে না। কারাগারের ভেতরেও বিএনপি নেতাদের আটকে রাখা হচ্ছে, সেলে আটকে রাখা হচ্ছে… একদম নির্জন অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। যেখানে দম বন্ধ থাকার পরিবেশ। এমনকি দিনের বেলায়ও তাদের সেলের ভেতরে আটক রাখা হয়।
এএইচআর/এসএম