গেল সোমবার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত আনসার ব্যাটালিয়ন বিল ২০২৩-এ আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যদের অপরাধীকে আটক, দেহ তল্লাশি ও মালপত্র জব্দের ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। 

এ প্রস্তাবের নানা সমালোচনা রাজনৈতিক মহল থেকে তো আসছেই, এতে খুশি নয় পুলিশও। 

এ প্রস্তাবের বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ্দীন মালিক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সরকার যেভাবে বিল উত্থাপন করেছে তা থেকে যদি সরে আসে, কিংবা যে ধারা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সেটি সংশোধন করে নেয় তাহলে সেটি হবে স্বস্তির বিষয়। কারণ যেভাবে উত্থাপন করা হয়েছে সেভাবে পাস হলে এটি নির্বাচনের সময় বিরোধী দল দমনের জন্য আরও বিশ হাজার লোকের সংখ্যা বাড়াবে মাত্র। পাশাপাশি এর জন্য কত ডজন আইন পরিবর্তন করতে হবে তার কোনো ইয়ত্তা নেই।  

বিলটিতে ব্যাটালিয়ন সদস্যের এখতিয়ার ও ক্ষমতা সংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছে, “কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য তার সম্মুখে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধ সংঘটনকারীকে আটক করিয়া অবিলম্বে পুলিশের নিকট সোপর্দ করিবে এবং ক্ষেত্র মতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা এতদ উদ্দেশ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে উক্ত আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি, কোন স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।”  

শাহদীন মালিক আরও বলেন, এটি পরিষ্কার যে নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদের জন্য এসব ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন আনসার ব্যাটালিয়নকে গ্রেপ্তারির ক্ষমতা দেওয়া হলে তার অপপ্রয়োগ হবে। সংস্কারের জন্য নতুন আইনটি করা হচ্ছে না। বরং নির্বাচনের সময় বিরোধীদের দমন করার জন্য আরও বিশ হাজার লোককে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দিতে এটি করা হচ্ছে। 

আনসারকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া আতঙ্কের বিষয় 
আনসার বাহিনীকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া আতঙ্কের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সমমনা ১২ দলীয় জোটের নেতারা।  

জোট নেতারা বলেন, ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল-২০২৩’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। আনসারকে পুলিশের মতো গ্রেপ্তারের ক্ষমতা প্রদান করা হবে। তখন পুলিশের মতো আনসারও যাকে খুশি আটক করবে।

এক বিবৃতিতে ১২ দলীয় জোটের নেতারা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তার জন্য আনসার বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এই বিল পাস হলে পুলিশ যা করে, আনসার বাহিনীও তাই করতে পারবে। স্বৈরতন্ত্র পোক্ত করতে আওয়ামী সরকার এটা করছে। এর ফলে দমন-পীড়ন দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। সেইসঙ্গে শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে উত্তর কোরিয়া বানানোর পথে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে! 

এনএফ