বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেছেন, আমরা ১৬-১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে। বুকে অনেক সাহস নিয়ে অনেক মিথ্যা ও আজগুবি মামলা নিয়েও বেঁচে আছি। ছাত্রদলসহ অজস্র সহকর্মীদের হারিয়েছি। প্রয়োজনে ২৮ অক্টোবরে আরও ১৭ হাজার প্রাণ দেব, তবু আপনাদের (সরকার) ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদী সমাবেশ তিনি এ কথা বলেন। ‘জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস এবং বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে এ প্রতিবাদী সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।

জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেন, ‘হলফ করে বলতে পারি গত ১৬ বছরে ৪০ লাখ মামলাধারী বিএনপির একটি কর্মীও আওয়ামী লীগে যায়নি। তাই কীসের আশা করেন? আবার কিছু সংখ্যক অতি উৎসাহী... পুলিশ-আনসার সদস্য দিয়ে ক্ষমতায় যাবেন, এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। ২৮ তারিখের মহাযাত্রায় ফয়সালা হবে আপনাদের অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে।’

আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা ঘোষণা দিয়েছেন— পাড়ায় পাড়ায় পাহারা দেবেন এবং বাস বন্ধ করে দেবেন। আপনারা না বন্ধ করলেও আপনাদের ‘চ্যালা-প্যালারা’ হয়ত বাস বন্ধ করে দেবে।’

পুলিশের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা বলেছেন তল্লাশি চালাবেন। প্রত্যেকের ঘরে ঘরে যাবেন, গ্রেপ্তার করবেন। এসব কথা বলে বিএনপির একটি কর্মীকেও ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে আসা বন্ধ করা যাবে না। খেলা হবে, কার বিরুদ্ধে... ভূয়ার বিরুদ্ধে। খেলা হবে যারা আমার কষ্টের উপার্জিত টাকা নিয়ে বিদেশে বাড়ি করেছে তাদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের ভালো লোকের বিরুদ্ধে নয়, তেমনিভাবে সব পুলিশদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নয়। যারা অতি উৎসাহিত হয়ে ২৮ অক্টোবরের আগে ঘরে ঘরে তল্লাশি করছে তাদের বিরুদ্ধে।’

‘আমাদের আন্দোলন খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য নয়। দেশের মানুষের জন্য। কারণ আমার নেতা তারেক রহমানকে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে ১০ হাজার মাইল দূরে রেখেছেন। তাতে তিনি অসন্তুষ্ট নন। তিনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তার মন দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সংকট আপনি সৃষ্টি করেছেন। এর সমাধান আপনাকে করতে হবে। আপনি যদি মানুষকে ভালোবাসেন, মানুষের দুঃখ-কষ্ট বোঝেন, তাহলে দয়া করে চলমান সংসদে ইজ্জত থাকতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংযোজন করে নির্বাচন দিন। আপনি যদি জনগণের ভালো চান, এসব বাদ দিয়ে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক বিল পাস করুন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। জনগণের ভোটের অধিকার করুন।’  

‘এই সরকারের কোনো শরম নেই। কারণ শরম যদি থাকতো তাহলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতো। গরিবের টাকা লোপাট করে হাজার কোটি টাকার ব্রিজ, শতশত সেতু ও হাজার মহাসড়ক উদ্বোধন করছেন। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পান কেন? আমি বলব আর কোনো মানুষের বুক খালি করবেন না।’

এসময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মহম্মদ রহমতুল্লাহসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন গণতন্ত্র ফোরাম সভাপতি ভিপি ইব্রাহিম।

এমআই/কেএ