দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছোট আকারের এক্সপার্ট গ্রুপ পাঠাবে বলে আওয়ামী লীগকে জানিয়েছে। 

রোববার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এমনটি জানানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান। 

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় দেড়ঘণ্টা উভয় পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে ইইউ রাষ্ট্রদূতসহ ইইউভুক্ত ১০টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগেরর পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, নির্মল চ্যাটার্জী, আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য সোহরাব হোসেন, তারিক হাসান সমী, খালেদ মাসুদ আহমেদ। 

বৈঠক শেষে সাংবাদিকেদের সঙ্গে কথা বলেন মুহাম্মদ ফারুক খান। তিনি বলেন, ইইউ এটা ঘোষণা করেছেন যে তারা একটা ছোট আকারের এক্সপার্ট গ্রুপ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য পাঠাবে।

আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান ইইউ জানতে চেয়েছে বলে জানান মুহাম্মদ ফারুক খান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কী চিন্তায় অগ্রসর হচ্ছে তা জানতে চেয়েছে ইইউ সদস্যরা। আমরা বলেছি, আমাদের সংবিধানের অনুযায়ী কিছুদিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন তাদের তফসিল ঘোষণা করবে।আমরা আমাদের সিডিউল মোতাবেক নির্বাচন করব। 

ফারুক খান বলেন, আজকের আলোচনা মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে তারা বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, আমরা যেই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাচ্ছি সেটাই তারা চাচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা কী কী করব সেটাও তারা জানতে চেয়েছে। 

বিএনপির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। তিনি বলেন, তবে আমরা বলেছি বিএনপি একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল, তারা আগামী নির্বাচনে আসবে বলে আমরা আশা করি। তবে সংলাপের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বল জানান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য।

ফারুক খান বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করলে দেশকে কীভাবে চালাবো সে বিষয়টিও জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা। সে বিষয়ে তাদের আমরা অবগত করেছি। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের সেই প্রশ্নের উত্তর তারা পেয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনের ইশতেহার কী রকম হবে তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা তাদের ব্যাখ্যা করে বলেছি যে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দুইটা দিক থাকবে। প্রথম অংশে, গত নির্বাচনে আমরা যে ইশতেহারে যে কমিটমেন্ট ছিল, সেই কমিটমেন্ট কতটুকু আমরা পূরণ করেছি তার জনগণকে জানাবো।

ফারুক খান বলেন, আগামী পাঁচ বছর আমরা কি করতে চাই সেটা ইশতেহার থাকবে। আমাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে, তারা এটা নিয়ে কাজ করছেন। সে কাজ শেষ হলে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সেটি প্রস্তাবিত ভাবে উপস্থাপন করা হবে, বৈঠকে পাস করা হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা জনগণকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষা নিয়ে কি চিন্তা ভাবনা করছি। বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সংকট সেটা নিয়ে আমরা কি চিন্তা ভাবনা করছি। এই বিষয়গুলো বৈঠক আলোচনা হয়েছে। আমি মনে করি সবচেয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমাদের খুব ভালো মিটিং হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউ যেই ৫০ বছরের ডিপ্লোম্যাটি সম্পর্ক তা খুবই চমৎকার। কিছুদিনের মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ব্রাসেলসে যাচ্ছেন। সেখানে আমাদের মধ্যে পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট হবে। এ কথাগুলো তারা বৈঠকের প্রথমেই বলেছেন।

এমএসআই/এসএম