জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, লুটপাট হওয়ার কারণে দেশের রিজার্ভ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে এখন দেউলিয়া হওয়ার পথে। আমি অনেক আগে বলেছিলাম, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেছেন, বাংলাদেশের রিজার্ভের গতি শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে। যদিও শ্রীলঙ্কার অবস্থান এখন আমাদের থেকে ভালো।

তিনি বলেন, তারা (শ্রীলঙ্কা) আস্তে আস্তে উপরের দিকে যাচ্ছে। তাদের জিনিসপত্রের দাম আমাদের চেয়ে কম। তাদের রিজার্ভের পজিশন আমাদের থেকে ভালো। আমরা খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছি। প্রতিমাসে এক বিলিয়ন ডলার করে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ১৭ বা  ১৮ বিলিয়নের দিকে আছে। এটি ১০ বিলিয়নের নিচে নামলে বিদেশ থেকে কোন জিনিস আনতে পারব না। এভাবে দেশের সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে মহানগর জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, দেশে সরকার এবং সরকারি দল এক হয়ে গেছে। ডিসি-এসপিরা সরকারি ব্যাচ পড়ে সরকারের স্লোগান দেন। সরকারের মিটিং মিছিল করেন। সরকারকে ভোট দেওয়ার জন্য আমাদের রিকোয়েস্ট করেন। তারা রাষ্ট্রকে কব্জা করেছে এবং রাষ্ট্রের মালিকানা থেকে জনগণকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এটাকে বলা হয় একদলীয় শাসন। জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে উঠে তারা একটা লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোকে খালি করে ফেলা হয়েছে। ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট করা হয়েছে। অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম বলেছেন, সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ খাতে বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। মেগা প্রকল্পে বিপুল অঙ্কের লোকসান হয়েছে।

জি এম কাদের বলেন, রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হয়েছে। এখানে ১৬ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। এখনো খরচ হচ্ছে। ভারত দুই হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র করেছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার খরচ করে। আবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র শতভাগ রাশিয়ান প্রকৌশলীর দ্বারা নির্মিত হচ্ছে। এটার জিনিসপত্র রাশিয়া থেকে আনা হচ্ছে। আপনার হাতে আপনার কিছুর চাবি নেই। এটা তাদের সাহায্য ছাড়া চালাতে পারবেন না এবং বন্ধও করতে পারবেন না। অথচ এটা করা হচ্ছে আমাদের মাটিতে। যেকোনো দুর্ঘটনা হলে ক্ষতিগ্রস্ত আমরাই হব।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি ও কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠকে পুনরায় চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ও ইয়াকুব হোসেনকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং আবু জাফর মাহমুদ কামালকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

এমআর/এসকেডি