আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি পিটার হাসের কাছে সকালে নাশতা করতে যায়, দুপুরে যায় লাঞ্চ করতে, রাতে যায় ডিনার করতে। আমি জানি না পিটার হাস তাদের কী স্বপ্ন দেখিয়েছেন। পিটার হাস কী করবেন? নিষেধাজ্ঞা দেবেন? তার মুরুব্বিদের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়ে গেছে। তলে তলে যখন সব ঠিক হয়ে গেছে। দৌড়াদৌড়ি করে লাভ হবে না।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এখন কোয়ার্টার ফাইনাল, সামনে সেমিফাইনাল, ফাইনাল হবে জানুয়ারিতে। খেলা হবে সারা ঢাকায়, খেলা হবে চট্টগ্রামে, খেলা হবে সিলেটে, খেলা হবে রাজশাহীতে, খেলা হবে বরিশালে, খেলা হবে খুলনায়, খেলা হবে সারা বাংলায়। ঠিক আছে, ফাইনাল পর্যন্ত খেলতে হবে। এখনই ক্লান্ত হলে চলবে না।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলের সর্বশেষ বক্তৃতা শুনে মনে হল, মির্জা ফখরুল এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মরা লাশ নিয়ে টানাটানি করছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরা লাশ। আজিমপুরের কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত। গোরস্তান থেকে ফখরুল এখন ওই মরা লাশ টেনে আনছে। এই মরা লাশের মুক্তি আসবে না।

মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। বঙ্গবন্ধু কন্যা বেঁচে থাকলে এদেশে নির্বাচন কেউ বন্ধ করতে পারবে না। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। এদেশে নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছেন শেখ হাসিনা। এদেশে নজিরবিহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন শেখ হাসিনাই করবেন। ফখরুল সাহেব নির্বাচনে না এলে আমও যাবে, ছালাও যাবে। দুইটায় হারাবেন। দুনিয়াব্যাপী আপনারা আমাদের বদনাম করেছেন, দেশে দেশে বদনাম করছেন, বদনাম ঘুচানোর জন্য শেখ হাসিনা এমন নির্বাচন করবেন, যে নির্বাচন হবে নজিরবিহীন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, খেলা হবে, খেলার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। খেলা হবে, সামনে আসছে সেমিফাইনাল। তারপরে ফাইনাল, গলা ঠিক রাখতে হবে। সামনে আরও দুই মাস, এখনই তোমরা বেশি ক্লান্ত হইয়ো না। 

২০০৪ সালের ২১শে আগস্টকে স্মরণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে এখানে দাঁড়ালে বিএনপির সেই নৃশংস চরিত্র আমাদের চোখের সামনে আসে। এই বিএনপি ওই বিল্ডিং থেকে গ্রেনেড মেরে আমাদের নেত্রীকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের ২৩টি প্রাণ সেদিন রক্তাক্ত করেছিল। অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছিলাম। এই সেই বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, এখানে এলে বিএনপি কত ভয়ংকর, বিএনপি কত নিষ্ঠুর, সেই ছবি আমরা বারবার দেখতে পাই। কাজে প্রস্তুত থাকতে হবে, সবদিক থেকেই খেলা হবে। ওরা ফাউল করবে, ফাউলের জবাব দিতে হবে। লাল কার্ড দেখাতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সেদিন বলেছিলাম রূপপুর কেন্দ্রের ইউরেনিয়ামের চালান আসছে। ফখরুল, মির্জা আব্বাস, মঈন খানরা বলে- রূপপুর বন্ধ করে দেবে। ইউরেনিয়াম যেটা আছে সেটা সারা দুনিয়া স্বীকৃত। আর এর মধ্য দিয়ে আমরা ইউরেনিয়াম ক্লাবে তেত্রিশ নম্বরে যুক্ত হয়েছি। এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যারা বন্ধ করে দিতে চায়, তাদের বলছি- আমরা এত কোটি কোটি টাকার ইউরেনিয়াম কেন আনলাম। ফখরুল মির্জা আব্বাসরা গরম হয়ে যায় তাদের মাথার উপর এসব ইউরেনিয়াম ঢালতে হবে।

বিএনপিকে আমেরিকা রোগে পেয়েছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আর কাউকে তো পায় না। ওইভাবে আমেরিকানরাও আসে না। পাত্তা দেয় না। দৌড়ে যায় পিটার হাসের কাছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পিটার হাস, দুপুরে লাঞ্চ করতে যায় পিটার হাস, রাতে ডিনার করতে যায় পিটার হাস। আমি জানি না হাসাহাসে ফখরুলকে কী স্বপ্ন দেখিয়েছে। তবে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। ফখরুল সাহেব দিল্লি বহু দূর। ক্ষমতার পথ আপনারাই বন্ধ করে দিয়েছেন। পিটার হাস সাহেব কি করবেন? ভিসা নীতি দেবেন? কি করবেন নিষেধাজ্ঞা দিবেন? পিটার হাস সাহেবের মুরুব্বিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়ে গেছে। আমেরিকার মুরুব্বি যারা তাদের সঙ্গে কথাবার্তা শেষ। উচ্চপর্যায়েও কথাবার্তা হয়ে গেছে। তলে তলে যখন সব শেষ তখন আর এসব করে লাভ কী? পিটার হাসকে দেখিয়ে নির্বাচন বন্ধ করবেন, ঢাকায় তাণ্ডব করবেন, সেই খেলা খেলতে দেব না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির সমাবেশ সঞ্চালনা করেন।

এমএসআই/এমজে