আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, রাজনীতিতে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের এই সময় পরিশ্রমী কর্মী একান্ত প্রয়োজন। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পদ সর্বস্ব রাজনীতির দিন শেষ। এখন জেগে ওঠার সময়।

বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে শ্যামপুর থানার সামনে বালুর মাঠ রাস্তায় শ্যামপুর-কদমতলী থানার অন্তর্গত ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৬০ ও ৬১ নং ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরশ বলেন, ওয়ার্ড সম্মেলনের মাধ্যমে আপনারা সেই নেতৃত্ব সৃষ্টি করবেন, যাদের ডাকে জনসমুদ্র সৃষ্টি হবে। যারা পর্বতসম বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার জন্য প্রস্তুত থাকবে। আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি কঠোর পরিশ্রম করে রাজনীতি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ভাগনে হওয়া সত্ত্বেও একজন কর্মী হয়ে পায়ে হেঁটে রাজনীতি করেছেন। কোনোরকম জাঁকজমক বা জৌলুস ছিল না তার আচার-আচরণ ও চাল-চলনে। তিনি সাধারণ মানুষের কাতারে মিশেই রাজনীতি করেছেন।

পশ্চিমা জোটকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আজকে অনেকে গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বলে। আমার প্রশ্ন ১৯৭১ সালে যখন রাজাকার, আলবদর, আল-সামস বাহিনী গণহত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, তখন এসব বিশ্ব বিবেকের ভূমিকা কী ছিল? তখন কি তারা গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকারের প্রশ্ন তুলেছিল? বা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল? এমনকি ২০০১ সালেও ঐ জামাত-বিএনপি সরকার যখন সেই পাকিস্তানি কায়দায় সনাতন ধর্মালম্বীদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে তাদেরকে উৎখাত করেছিল, তখনো কি এই মানবিক মূল্যবোধের ধারক ও বাহকেরা প্রশ্ন তুলেছি? পরিষ্কারভাবে এখানে একটা পক্ষপাতিত্ব লক্ষণীয় এবং একটা দ্বিচারিতা বিরাজমান। 

তিনি আরও বলেন, তারা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে এমন একটা সময়, যখন এ দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হয়ে মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন আর এসব ধমক ভয় পায় না। বাংলাদেশের মানুষ এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। বাঙালি বীরের জাতি। বাঙালি জেগে উঠবেই। শত বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই বাঙালিকে টিকে থাকতে হয়। সুতরাং এসব সাময়িক মানুষ প্রদত্ত প্রতিকূলতা বাঙালি ভয় পায় না। এসব নিষেধাজ্ঞা এবং বঞ্চনাও বাঙালি বীরত্বের সঙ্গেই মোকাবিলা করবে।

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আজকের এই সম্মেলনের মাধ্যমে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ওয়ার্ড পর্যায়ের যে নেতৃত্ব সৃষ্টি করবে, সেই নেতৃত্ব আমাদের সুখী-সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তার হাত ধরেই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ পরিণত হবে উন্নত রাষ্ট্রে। কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের যুবকদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।

সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাড. সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি সৈয়দ আহমেদ।  

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. হারিছ মিয়া শেখ সাগর, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের প্রচার সম্পাদক আরমান হক বাবু, দপ্তর সম্পাদক মো. এমদাদুল হক এমদাদ, সহ-সম্পাদক আইয়ুব আলী ও সদস্য গোলাম মোস্তফা।

এমএসআই/কেএ