আমরা বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে নেই : সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আমরা বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে নেই। আমরা বাংলাদেশের মানুষের দিকে তাকিয়ে আছি। বাংলাদেশের মানুষ বাংলাদেশের আগামী ভবিষ্যৎ তৈরি করবে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দমন, নিপীড়ন, গ্রেপ্তার ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এবং অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করে ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, আজ মানুষকে মাঠে নামতে হবে। বাংলাদেশের কঠিন সময়ে আপনারা যদি বিভ্রান্ত হন, তাহলে আপনারা সময়ের যে দাবি, সেখান থেকে বহুদূরে সরবেন। এ দেশের ধ্বংসের জন্য আপনারাও দায়ী থাকবেন। কাজেই আমরা জনগণকে বলব, আপনারা রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিন। আমরা বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে নেই। আমরা বাংলাদেশের মানুষের দিকে তাকিয়ে আছি। বাংলাদেশের মানুষ বাংলাদেশের আগামী ভবিষ্যৎ তৈরি করবে।
তিনি বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার যুগপৎ আন্দোলনের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠনগুলো যৌথভাবে একটি শ্রমিক কনভেনশনের আয়োজন করেছে। সেটির স্থান নেওয়া হয়েছিল মহানগর নাট্যমঞ্চ। সেটির অনুমতি সিটি করপোরেশন দিয়েছে। কিছুক্ষণ আগে ডিএমপি জানিয়েছে, ওই দিন বায়তুল মোকাররমের গেটে নাকি কৃষক লীগ সমাবেশ ঘোষণা করেছে। কাজেই মহানগর নাট্যমঞ্চে তারা এই কনভেনশন করার অনুমতি দিতে পারবে না। এই হচ্ছে বর্তমান সরকারের অবস্থা।
জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার নাকি সভা সমাবেশে কোনো বাধা দেয় না, তারা নাকি এই দেশে আইনশৃঙ্খলা, শান্তি খুব বজায় রেখেছে, তারা নাকি একটি সুষ্ঠু ভোট করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গভর্নর ডি গ্রেড পেয়েছেন। এই চতুর্থ শ্রেণিরই যোগ্যতা এদের। এরা চতুর্থ শ্রেণির লোক কিন্তু লুটপাটে একেবারে এ প্লাস, দালালিতে এ প্লাস, দেশ বিক্রিতে এ প্লাস। কাজেই এই দালাল, লুটপাটকারী, দেশ বিক্রিকারী যারা আজ রাষ্ট্র প্রশাসনে বসে সরকারের ভোট ডাকাতি, তাদের আরেকটি নীল নকশার নির্বাচনকে জায়েজ করতে চান, সফল করতে চান, তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে। এজন্য আমাদের দরকার গণজাগরণ দ্বারা অভ্যুত্থান।
বক্তব্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারি এক নেতা বলেছেন, পাল্টা সমাবেশ দিয়ে নাকি তারা সরকারকে পাহারা দিচ্ছেন। সরকার গত ১৫ বছরে কী এত অপরাধ করেছে যে তাদের পাহারা দিতে হবে? তারা (সরকার) হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার, খুন, দুর্নীতি, ভোট চুরি, ডাকাতি করেছেন। তারা এত অপরাধ করেছেন যে সরকারকে এখন পাহারা দেওয়ার দরকার হচ্ছে। তাই আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, পাহারা দিয়ে এই সরকারকে রক্ষা করা যাবে না।
তিনি বলেন, পরিস্থিতিটা খুবই ভয়াবহ। খবরে বেরিয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে গার্মেন্টসের রপ্তানি ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। এ পরিস্থিতি যদি চলে এবং তারা যদি সিদ্ধান্ত নেয় গার্মেন্টস পণ্য তারা আমদানি করবে না, তাহলে আমাদের গার্মেন্টস বন্ধ হবে, লাখ লাখ শ্রমিকরা বেকার হবে।
সাইফুল হক বলেন, আপনারা (সরকার) যে জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থাকতে চান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব বলে মানুষ যাদেরকে চেনে, তারা সবাই এই সরকারের ওপর অনাস্থা জানিয়েছে। এ কারণেই নির্বাচনের ৩-৪ মাস আগে ভিসা নীতি কার্যকর করা হয়েছে। তার মানে কি? তারা আগেই বুঝতে পেরেছে এই সরকার আবার একটা এক তরফার, আরেকটা নীল নকশার, আরেকটা সাজানো নির্বাচন করতে চাইছে। আর এই খেলা বন্ধ করার জন্যই তারা তাদের কাজ করছে। আর আমরা রাজপথে আছি।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহ সভাপতি তানিয়া রবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা পদযাত্রা করেন। পদযাত্রাটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
/ওএফএ/এসএসএইচ/