‘আ.লীগের বিরিয়ানি খেয়ে অনেকে বিএনপির মিছিলে আসে’
আওয়ামী লীগের বিরিয়ানি খেয়ে অনেকে তাদের মিছিলে থাকে না, বিএনপির মিছিলে চলে আসে বলে মন্তব্য করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পারে প্রতিদিন টাকা দিয়ে বিরিয়ানি খেয়ে শান্তি কমিটির মিটিং করতে। আবার টাকা নিয়ে বিরিয়ানি খেয়েও অনেকে তাদের মিছিলে যায় না। এই হলো জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের কাজির দেউরি নুর আহম্মেদ সড়কে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্রঘোষিত কালো পতাকা গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশ শেষে আমীর খসরুর নেতৃত্বে একটি মিছিল নুর আহম্মেদ সড়ক থেকে শুরু হয়ে লাভলেন, বৌদ্ধ মন্দির মোড়, চেরাগী মোড় হয়ে আন্দরকিল্লা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের করের টাকা দিয়ে। দলবল, পরিবারসহ দক্ষিণ আফ্রিকায় উপস্থিত হয়েছেন। ব্রিকসের নাকি সদস্য হবে। ওইখানে যে ওদের অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার আছে। যারাই ওখানে অতিথি হিসেবে গিয়েছে বা উপস্থিত ছিল তাদের ছবিতেও শেখ হাসিনা নেই। তাহলে শেখ হাসিনা কোথায় ছিল? বাংলাদেশি কিছু আওয়ামী লীগের লোকজন ওইখানে আছে। দক্ষিণ আফ্রিকাতে যত বাঙালি থাকে তার ৯০ শতাংশ হচ্ছে বিএনপি। আমি জেনে বলছি। ১০ শতাংশ হচ্ছে তারা, যাদের পরিবার এখানকার লুটপাটের ভাগ পাচ্ছে এই দুর্নীতিবাজ সরকার থেকে। এদেরকে নিয়ে উনি একটি সভা করেছেন। অথচ তিনি গেছেন সদস্যপদের জন্য। সেটি থেকে বঞ্চিত হয়ে এদের সঙ্গে গিয়ে সভা করছে। ওখানে কি বলছে? নৌকায় ভোট দিতে বলছে। ওরা কেউ কিন্তু ভোটার না, ওরা তো দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকে। বাংলাদেশের করের টাকা খরচ করে আপনি দক্ষিণ আফ্রিকায় গেছেন কি নৌকায় ভোট চাইতে?
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন সেখানে। সে সভায় বিএনপিকে মন খুলে গালিগালাজ করেছেন তিনি। দেশে যেরকম সকাল-বিকেল প্রতিদিন করেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে বিএনপি, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ সবাইকে মন খুলে গালি দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের করের টাকা দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে বিএনপিকে কেন গালি দিতে হবে? প্রতিদিন তো বাংলাদেশে দিচ্ছেন। এটার জন্য কি দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার দরকার আছে? কারণ হচ্ছে ওইখানে কোথাও উনি পাত্তা পায়নি। এজন্য ঘরের কোণের মধ্যে কিছু আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে উনি বক্তব্য রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, কিছু আওয়ামী পুলিশ আছে, তাদেরকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা দেবে। আর বিএনপির প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগে পরে গ্রেপ্তার করবে। শতবছরের পুরোনো অস্ত্র দিয়ে বলে তারা নাকি অস্ত্র নিয়ে ধরা পরেছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নির্ভরশীলতা। এরপর বিচারবিভাগকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্রুতগতিতে জেলে পাঠানোর একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমি আগে বলেছিলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী বিচারক লীগ ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরা আওয়ামী লীগের আরেকটি অঙ্গ সংগঠন।
খসরু বলেন, যে আইনে এসব মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে সে আইনেও এইটাও বলা আছে যদি মামলা মিথ্যা হয় তাহলে সেটা শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এটার শাস্তি আজীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
তিনি বলেন, আগামী দিনে যে নির্বাচন আসছে সেটা বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা ভূমিকা পালন করবে, তাদের আমেরিকার ভিসা তো বাতিল হবেই। সেটা সমস্যা নেই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকতে পারবে না। চলে আসতে হবে। চুরি করে যে বাড়ি-ঘর করছেন, সেসব আমেরিকান সরকার নিয়ে নেবে। তাদেরকে বিতাড়িত করবে। তাদের ছেলেমেয়েরা কেউ পড়তে যেতে পারবে না। যেগুলো আছে পাঠিয়ে দেবে। আর তারা তো যেতেই পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যে স্যাংশন দেবে এখান থেকে কেউ মুক্তি পাবে না।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অধিকার আছে। কেউ যদি কোনো নাগরিকের নাগরিক, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেয় তাহলে সেই নাগরিকের অধিকার আছে সেটা প্রতিরোধ করা। আবারও বলছি দেওয়ালের লিখন পড়তে শেখেন। দেওয়ালের লিখন হচ্ছে শেখ হাসিনার বিদায়। এখনও যারা পড়েননি, পড়ে নেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
এমআর/ এমএ