সরকার প্রধানের নির্দেশে কিছু সংখ্যক অতি-উৎসাহী দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তা বেআইনি কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য মাঠ পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

রোববার (২০ আগস্ট) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, সরকার প্রধানের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও নির্যাতন থেকে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও রেহাই পাচ্ছেন না। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি দেশের বিশিষ্ট লেখক ও খ্যাতিমান সাংবাদিক শফিক রেহমান এবং মাহমুদুর রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আজ্ঞাবহ আদালত।

ফখরুল বলেন, অবৈধ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দেশের নিরীহ গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর তার নিজস্ব বাহিনী দ্বারা গুলি করে হত্যা, গুম, খুনসহ সকল প্রকার নির্যাতন চালাচ্ছে। এই থেকেই বোঝা যায় সরকার বিরোধী মতের আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে এই সরকারের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রতিদিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। এটা ইঙ্গিত দেয়— যেভাবেই হোক তারা বিরোধী দলকে মাঠ থেকে সরিয়ে আবারও ক্ষমতায় যাবে, এটাই একমাত্র লক্ষ্য।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী পার্টি। অবৈধ সরকারের নির্দেশে পুলিশ এসব করছে। আমরা বারবার বলেছি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে। বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনী একইভাবে কাজ করছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে প্রয়োজনে আমরা দেখাব। বিচারপতিদের বলা হচ্ছে, দ্রুত সাজার রায় দিতে। অর্থাৎ তারা পুরো মাঠ খালি করে দিতে চায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে সরকার নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য বিরোধী পক্ষকে নির্বাচনে অযোগ্য এবং নেতাকর্মীদের নির্বাচনী মাঠ থেকে তথাকথিত আইনি প্রক্রিয়ায় বিতাড়িত করার সব অপকৌশল গ্রহণ করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হবিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে গুলি, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে শত শত নেতাকর্মীকে আহত করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৮ আগস্ট ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানকে তার আজিমপুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। এ খবর পেয়ে তার বাসার সামনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, ঢাবি ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ, এফ রহমান হল ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দীন মোহাম্মদ বাবর, শিক্ষানবিশ আইনজীবী আরিফ বিল্লাহ উপস্থিত হলে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে হানা দিয়ে তাদের তুলে নিয়ে যায়। পরে তাদের পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে নাটক সাজিয়ে আবারও একই পথে অগ্রসর হচ্ছে। অবিলম্বে তাদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

এএইচআর/এসকেডি