জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের সংবাদ সম্মেলন/ ছবি- ঢাকা

কওমি অঙ্গনে পূর্বসূরীদের আকিদা ত্যাগকারী ‘মিথ্যাচারী ভণ্ডদের’ তালিকা প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট। এরমধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ‘নীল নকশাকারীদের ষড়যন্ত্রের’ স্বরূপ উদঘাটন করা হবে। তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে আগামী ৫ জুন একটি ‘নীরব বিপ্লবের মাইলফলক’ হবে।

শনিবার (৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। এ সময় জোটের পক্ষে ১০টি দাবি তুলে ধরেন তিনি।

দাবিগুলো হচ্ছে- ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাটহাজারী, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হেফাজতের কর্মসূচি পালনের সময় মানুষ হত্যার উস্কানিসহ মধ্যযুগীয় তাণ্ডব সৃষ্টির যারা হুকুম দিয়েছেন তাদের গ্রেফতার করতে হবে এবং মাস্টার মাইন্ডদের খুঁজে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। 

একজন বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি উঁচু পর্যায়ের তদন্ত কমিটি করে বিগত বছরব্যাপী ওয়াজের নামে হেলিকপ্টার সওয়ারীদের আয়ের উৎস, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের অপতৎপরতার তদন্ত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারী হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনাসহ সার্বিক ঘটনাবলী তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করতে হবে।

গোটা কয়েক উগ্রবাদীদের কারণে কওমি মাদরাসার নিরীহ ছাত্ররা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা আহমদ শফির (র:) হত্যা মামলার তদন্ত দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।

৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনায় যারা অনুপ্রবেশকারীদের ষড়যন্ত্রে বিভিন্ন মামলার আসামি হয়েছেন তাদের সাধারণ ক্ষমার আওতায় এনে হত্যা ও অগ্নিসংযোগের মামলা ছাড়া সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় চাকরিরত দারুল আরকাম মাদরাসার শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। 

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সব কয়টি প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুলে পিছিয়ে পড়া কওমি ওলামাদের প্রধান্য দিতে হবে।

দেশের সব মসজিদের জন্য নীতিমালা তৈরি করতে হবে এবং মসজিদগুলো ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কোরআন শিক্ষা ও মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। 

কওমি মাদরাসাগুলোর পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী করার ব্যবস্থা নিতে হবে। 

চিহ্নিত উগ্রবাদীদের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রভাবশালী সরকারি ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে।

এ সময় বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট দাবিগুলো বাস্তবায়নে কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর মধ্যে আছে- উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও উদ্যতবাদীদের আসল চেহারা জনসম্মুখে ব্যাপক প্রচারের লক্ষ্যে দলের পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশের আগেই দেশব্যাপী ব্যাপক সফর; হেফাজতী তাণ্ডবে হতাহত মাদরাসাছাত্র, পথচারী সাংবাদিক, পুলিশসহ ক্ষতিগ্রস্তদের সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতার ব্যবস্থা গ্রহণ; ৫ জুন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের পূর্বনির্ধারিত ঢাকার মহাসমাবেশ সফল করতে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা তাজুল ইসলাম, মাওলানা শিহাব উদ্দিন, সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান, মহাসচিব মনিরুজ্জামান রব্বানীসহ আরও অনেকে।

এমএইচএন/এইচকে