একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ঢাকা-৭ আসন ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপি/ ছবি : সংগৃহীত

জোটবদ্ধভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। সেবার নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও এ আসনটি জোটসঙ্গীদের ছেড়ে দিতে পারে দলটি। তাই এ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

যদিও এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন দলটির প্রয়াত নেতা নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর স্ত্রী ও সাবেক কমিশনার নাসিমা আক্তার কল্পনা। এছাড়া এ তালিকায় পিন্টুর ভাই রিন্টু এবং দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনের নামও রয়েছে।

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, মোস্তাফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম এবারও বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে আছে। তাছাড়া এ আসনে বিএনপির শক্তিশালী কোনো প্রার্থী নেই। ফলে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে এবং মন্টুর দল শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকলে এ আসনটি ধানের শীষের মনোনয়ন তাকেই দেওয়া হবে। আর যদি ভিন্ন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে বিএনপির সাবেক প্রভাবশালী নেতা প্রয়াত পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন। যদিও পিন্টুর ভাই নাসিম আহম্মেদ রিন্টুও এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন চান।

আরও পড়ুন : ঢাকা-১৩ : নানক, সাদেক নাকি বজলু? 

মোস্তাফা মহসিন মন্টু ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। এ অবস্থায় নির্বাচন নিয়ে কী হয় সেটাই দেখার বিষয়। এখন সরকারের তেল, কয়লা পেট্রোল কেনারও পয়সা নেই। এখন নির্বাচনের চাইতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানুষের বাঁচা।

তিনি বলেন, আমরা এখন দেখব দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যায়। ২০১৪ সালে সরকার একটা নির্বাচন দিয়েছিল, যে নির্বাচন মোটেও গ্রহণযোগ্য হয়নি। বিনা ভোটের সরকার। আবার ২০১৮ সালে রাতের অন্ধকারে ভোটের সরকার। এই সরকার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। এই সরকারকে কি বিশ্বাস করা যাবে? কীভাবে বিশ্বাস করা যাবে? গতবার (২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে) প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আমি কথা দিচ্ছি নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। আপনারা আসেন। তার কথায় ভরসা রেখে সবাই নির্বাচনে গিয়েছিল (অংশ নিয়েছে)। কিন্তু রেজাল্ট কী হয়েছে? এখন এসব বিষয় পর্যালোচনা হবে। আমরা বিরোধীদলগুলো বিভিন্ন সময়ে বসেছি, আরও বসব। তারপর মনোনয়নসহ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে ঢাকা-৮ (বর্তমান ঢাকা-৭) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের হাজি মোহাম্মদ সেলিমকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন নাসির উদ্দিন পিন্টু। এবার এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন তার ভাই নাসিম আহম্মেদ রিন্টু।

প্রয়াত নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা ও তার ভাই রিন্টু/ ছবি : সংগৃহীত

এ প্রসঙ্গে রিন্টু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামী নির্বাচন যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়, তাহলে আমি দলীয় মনোনয়ন চাইব।

২০১৮ সালে ঢাকা-৭ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বিএনপির মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন নাসিমা আক্তার কল্পনা। যদিও তিনি চূড়ান্ত মনোনয়ন পাননি। এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন : ছেলেকে ‘বিকল্প’ রেখেছেন হাজি সেলিম, আসন ফেরত চান মোস্তফা জালাল

এ প্রসঙ্গে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাসিমা আক্তার কল্পনার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দেবর রিন্টু বলেন, আমি আমার মনোনয়নের বিষয়ে বলত পারব। ওনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

বিএনপির একটি সূত্রে জানা গেছে, নাসির উদ্দিন পিন্টুর সম্পদ ও তার রাজনৈতিক উত্তরসূরি হওয়া নিয়ে পারিবারিকভাবে দ্বন্দ্ব চলছে। শুধু তাই নয়, নাসিমা আক্তারের পরিবারেও এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। পারিবারিক সমস্যার কারণে রাজনীতিতে এখন তিনি কিছুটা নিষ্ক্রিয়।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বৃহত্তর লালবাগ থানার সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন খোকনও ঢাকা-৭ আসন থেকে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী।

তিনি বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করি। এখন দল থেকে যদি মনোনয়ন দেয় নির্বাচনে অংশ নেব। আর দল যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয় তাহলে তার পক্ষে কাজ করব।

এএইচআর/এসকেডি