আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তিন সাংগঠনিক সম্পাদকের বিভাগীয় দায়িত্ব পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিভাগীয় দায়িত্ব পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে বলে দলটির দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। মূলত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের ব্যর্থতার দায়েই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানা যায়। 

দলটির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চার জেলার বিভাগীয় দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদককে ওই বিভাগের একটি জেলার নেতারা মানতে চাইছেন না। ওই সাংগঠনিক সম্পাদককে অতিথি করে কোনো দলীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করবেন না বলে জেলার নেতারা সাফ জানিয়ে দেন। আর এর থেকেই কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিভাগীয় দায়িত্ব পরিবর্তনের চিন্তার সূত্রপাত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, চার জেলার ওই বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদককে দায়িত্ব পরিবর্তন করতে গিয়ে বাকি দুই সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পরিবর্তন করতে হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে সাংগঠনিক দুর্বলতা ও ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে। এই জন্যই সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিভাগীয় দায়িত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যদিও এতে বিশেষ কোনো লাভ নেই। 

সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিভাগীয় দায়িত্ব পরিবর্তন রুটিন ওয়ার্ক বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি বলেন, এটা দলের একটা রুটিন ওয়ার্ক। যার দায়িত্ব অন্য বিভাগে দেওয়া হয়েছে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক পদেই আছেন। এতে বিশেষ কিছু পরিবর্তন হয়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে দুর্বলতার জন্যই বিভাগ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। নেত্রীকে দলের তৃণমূলের বিষয়ে সঠিক সময়ে, সঠিক তথ্য না দেওয়াও অন্যতম কারণ হতে পারে। 

অন্য সাংগঠনিক সম্পাদকদের বিভাগ পরিবর্তন না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণ সম্পাদকের পছন্দের লোকজনকে বিভাগীয় দায়িত্ব ঠিক রাখা হয়েছে। আর যে বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক সম্পাদককে সরানো হয়েছে সেখানে আগে দায়িত্ব পালন করা একজনকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

পুনর্বিন্যাস করা তালিকা অনুযায়ী সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আহমদ হোসেন। তিনি আগে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। তার জায়গায় চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে। তিনি ছিলেন রংপুর বিভাগের দায়িত্বে। রংপুর বিভাগে নতুন করে দায়িত্ব পেয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন শফিক। তিনি আগে সিলেট বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। 

এ ছাড়া খুলনা বিভাগে বিএম মোজাম্মেল হক, রাজশাহী বিভাগে এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা বিভাগে মির্জা আজম, বরিশাল বিভাগে অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও ময়মনসিংহ বিভাগে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বহাল রয়েছেন।

এইউএ/ওএফ