নতুন দলের নিবন্ধন দৌড়ে পিছিয়ে পড়া এবি পার্টি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রতিবাদলিপি জমা দিয়েছে। এছাড়া নিবন্ধন পুনর্বিবেচনা করার আবেদন করেছে বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি)। 

সোমবার (২৪ জুলাই) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের প্রাপ্তি জারি শাখায় নিবন্ধনপ্রত্যাশী এই দুই দল ইসিতে আলাদা আলাদা লিখিত চিঠি জমা দেয়।

এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান স্বাক্ষরিত ইসিতে জমা দেওয়া লিখিত প্রতিবাদে বলা হয়, নিবন্ধনের জন্য এবি পার্টি  যথাযথ আবেদন জমা দেওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী এর নানা ত্রুটি সংশোধন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। আবেদন করা ৯৩টি দল থেকে ১২টি রাজনৈতিক দলকে ইসি প্রাথমিক বাছাইয়ে যোগ্য বিবেচনা করে। এবি পার্টির নাম মনোনীত ১২টি দলের নামের তালিকায় ১ নম্বরে ছিল। ১২টি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর, জেলা ও মহানগর, উপজেলা ও মেট্রোপলিটন থানাগুলোতে দলের কার্যকর দপ্তর এবং তৎপরতা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম গত ২ মে থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হয়। এবি পার্টির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও যাচাই বাছাই কার্যক্রমে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, মাঠপর্যায়ে এই যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে বিভিন্ন জেলার এবং বেশ কিছু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে রহস্যজনকভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এবি পার্টির প্রতি বিদ্বেষ ও হয়রানিমূলক আচরণ করতে দেখা যায়। উপায়ান্তর না দেখে গত ২৩ মে আমরা কমিশন সচিব বরাবরে একটি চিঠি ও স্মারকলিপি দেই। দুঃখজনক হলেও সত্য ইসি এ ব্যাপারে কোনো তদন্ত বা প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

গত ২৫ জুন নির্বাচন কমিশন একটি পরিপত্র মারফত ১২টি দলের মধ্য থেকে এবি পার্টিসহ চারটি দলকে বাছাইয়ে সঠিক পাওয়ায় পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন। গত ৩ থেকে ৭ জুলাই পরিচালিত কার্যক্রমেও এবি পার্টির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হয়। এই পুনঃতদন্তের রিপোর্টেও এবি পার্টি সব বাস্তব তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে।

পরম পরিতাপের বিষয় হলো, গত ১৬ জুলাই ইসি শুধুমাত্র দুটি দলকে নিবন্ধনের জন্য বিবেচিত হিসেবে ঘোষণা দেয়। এবি পার্টিসহ বাকি অন্যান্য দলকে অযাচিতভাবে বাদ দেওয়া হয়।

আমরা মনে করি, মাঠে ময়দানে সক্রিয়, কার্যকর এবং নিবন্ধনের নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও এবি পার্টিসহ একাধিক রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন না দিয়ে অপরিচিত, ভূঁইফোঁড়, অকার্যকর দলকে নিবন্ধন দিয়ে নির্বাচন কমিশন চরমভাবে বিতর্কিত হয়েছে। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের এমন পক্ষপাতমূলক ও বাস্তবতা বিবর্জিত সিদ্ধান্ত আমাদেরকে ক্ষুব্ধ করেছে এবং জাতির কাছে এই কমিশনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের নিকট এরকম অগ্রহণযোগ্য, বৈষম্যমূলক, অনিয়মতান্ত্রিক অন্যায্য সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এবি পার্টিসহ কার্যকর দলগুলোর নিবন্ধন দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে বিএমজেপি সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডলের ইসিতে জমা দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, বিএমজেপির নিবন্ধন সম্পর্কিত বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন। যারা এদেশের নিপীড়িত মানুষের কথা রাজনৈতিকভাবে তুলে ধরার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী এ দলের দিকে তাকিয়ে আছে, তাদের একটি কথা বলার জায়গা হবে এটা আশা করে। তাদের সেই চাওয়াকে বঞ্চিত করবেন না আশা করি। এটা বিশ্বাস করতে চাই যে, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হয়ে এ দলের মর্মকথা বুঝতে সমর্থ হবে।

এসআর/জেডএস