বিএনপি কর্মসূচি করে বিদেশিদের দেখাতে চায় : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি তাদের কর্মসূচিগুলো জনগণকে দেখাতে চায় না, বিদেশিদের দেখাতে চায়। বিদেশিরা তাদের শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে সন্দিহান, তাই তাদের একটু শক্তি দেখানোর চেষ্টা করছে। যা একটি রাজনৈতিক দলের দেউলিয়াত্বকে প্রকাশ করে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১২ জুলাই) বিএনপির এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে। রাজধানীতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে কি না– জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নতুন করে এই এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা, এটা যে খুব বেশি গুরুত্ব বহন করে তা কিন্তু নয়। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেব না। আমরা অতীতেও দেখেছি, বিএনপি যখনই কর্মসূচি ঘোষণা করে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায় এবং জনজীবনে ভোগান্তি ঘটায়। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারই মূল উদ্দেশ্য। সেই সুযোগ আমরা দেব না। আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল, আমরাও রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকব, জনগণের পাশে থাকব।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল যখন দেশে অবস্থান করছে, তাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসার কথাও রয়েছে, তার আগে এরকম একটি আন্দোলনকে আপনি কীভাবে দেখছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ইইউ প্রতিনিধি দল এখন দেশে অবস্থান করছে। এসময়ে তাদের এ ধরনের কর্মসূচির দেওয়ার অর্থই হচ্ছে তারা আসলে এ কর্মসূচিগুলো জনগণকে দেখাতে চায় না, বিদেশিদের দেখাতে চায়। বিদেশিরা তাদের শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে সন্দিহান, তাই তাদেরকে একটু শক্তি দেখানোর চেষ্টা করছে। আসলে বিদেশিদের কাছে শক্তি প্রদর্শনের কোনো প্রয়োজন নেই। তাদের (বিএনপি) যদি কোনো অভিযোগ, অনুযোগ থাকে সেটি জনগণের কাছে বলতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তাদের সমস্ত কর্মসূচির সব কথাবার্তা বিদেশিদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা প্রসূত। যা একটি রাজনৈতিক দলে দেউলিয়াত্বকে প্রকাশ করে।
আরপিও সংশোধন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন যখন সন্তোষ প্রকাশ করে (আরপিও নিয়ে) তখন আমি সেটির সঙ্গে সহমত প্রকাশ করি অবশ্যই। আর নির্বাচন কমিশনই বলছে, আরপিও সংশোধন যেভাবে হওয়ার কথা এবং সংসদে যেভাবে পাস হয়েছে সেটা নিয়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। আমরাও তাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করি। আমরা প্রত্যাশা করি, নির্বাচন কমিশন যে শক্তিশালী অবস্থানে আছে, সে শক্তিশালী অবস্থানে থেকে তারা আগামী নির্বাচনকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করতে পারবে।
আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, সেই গণতন্ত্র আজকে হারিয়ে গেছে, আমরা রাজা-রানির রাজ্যে বাস করতে চাই না– মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমি সে প্রশ্ন রাখতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি বাবাসহ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। উনি তো মুক্তিযুদ্ধ করেননি। কয়েক দিন আগে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, পাকিস্তানই ভালো ছিল। যে দলের মহাসচিব বলে পাকিস্তানই ভালো ছিল, সেই দল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে কতটুকু বিশ্বাস করে সেটা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ তার দল তাকে শোকজ করেনি বা পদ থেকে বাদ দেয়নি। অর্থাৎ মির্জা ফখরুলরা বাংলাদেশকে কতটুকু বিশ্বাস করে সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন। তিনি রাজা-রানি বলতে কি খালেদা জিয়াকে বুঝিয়েছেন কি না সেটি হচ্ছে প্রশ্ন।
এমএম/এসএসএইচ/