ঢাকা সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল।

সোমবার (১০ জুলাই) বিকেলে গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বাসবভনে এক ঘণ্টার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদসহ পাঁচজন।

বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, আজকের বৈঠক সিরিয়াস কিছু নয়। ওদের সঙ্গে আমাদের প্রধান বৈঠকটা আগামী ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে হবে। সেদিন আপনাদের পুরো ব্যাপারটা জানানো হবে। 

তিনি বলেন, আজকে সৌজন্যমূলক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। অনেকটাই পরিচিত হওয়ার মতোই। নির্বাচন নিয়ে তেমন কথা হয়নি। ওনারা হয়তো পরবর্তী সময়ে আরও দলের সঙ্গে বসবেন, কথা বলবেন। 

সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শাম্মী আহমেদ বলেন, এটা আমাদের এজেন্ডায় ছিল না। কোন দল আসবে না আসবে এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এগুলো নিয়ে তাদের আলোচনা করা আমার জায়গা থেকে শোভন মনে করি না। এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়নি। 

ইইউ প্রতিনিধি দল আপনাদের কোনো প্রস্তাব দিয়েছে কি না? -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা কোনো প্রস্তাব আমাদের দেয়নি। যেহেতু আমাদের আনুষ্ঠানিক বৈঠকের তারিখ নির্ধারিত আছে। তাই এখানে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। 

জানা গেছে, ইইউর প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠকে বসবে।

নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে দুই সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশ সফরে এসেছে ইইউর প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলটি। সফরের শুরুর দিন রোববার (৯ জুলাই) সকালে ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলির গুলাশানের বাসায় শুরু হয় প্রথম কার্যক্রম। সেখানে ইইউর কয়েকটি সদস্য দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রুটিন বৈঠক করেন তারা। পরে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গেও বৈঠক করেন তারা।

বাংলাদেশে দুই সপ্তাহ অবস্থান করবে ইইউর পর্যবেক্ষক দলটি। বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলের কাছে তাদের মূল্যায়নের মতামত জমা দেবেন বিশেষজ্ঞ দলটি। তাদের মতামত ইতিবাচক হলে পরবর্তী সময়ে আরও প্রতিনিধি দল পাঠাবে ইইউ। আর সবকিছু ঠিক থাকলে অর্থাৎ প্রতিনিধি দলের মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো হবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ইইউ প্রধান।

পরবর্তী সময়ে যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দল আসবে তাদের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, লজিস্টিকস ও নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়াদি মূল্যায়ন করবে এই দলটি।

এমএসআই/এসএম