দেশের ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ইসলামী ঐক্য জোটের কর্মসূচি ঘোষণা
দেশের ষড়যন্ত্রকারী, মিথ্যাচারী ও ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে পাঁচ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্য জোট।
পাঁচ দফা কর্মসূচি হলো- আগামী ১৫ জুলাই বায়তুল মোকারমের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল। ১৭ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের সব কয়টি থানায় জনসভা, পথসভা ও কর্মী সমাবেশ। ২৯ জুলাই ঢাকা গুলিস্তান বশির অডিটোরিয়াম এ সুধী সমাবেশ। ১ আগস্ট থেকে মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট-এর শহীদদের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন এবং ৭ অক্টোবর ঢাকার সরোয়ারর্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জুলকার নাঈন ডালিম, মাওলানা আবু হানিফ, মাওলানা আব্দুর রহিম হাজারী, মহাসচিব শায়খুল হাদীস মুফতি মনিরুজ্জামান রব্বানী, যুগ্ম-মহাসচিব আসাদুজ্জামান খান, সাংগঠনিক সচিব প্রিন্সিপাল মুফতি বুরহান উদ্দিন আল আজিজি, প্রিন্সিপাল মুফতি তাজুল ইসলাম, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, ইসলামী যুব জোট সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ সাহিদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ হোসেন এজাজ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে আমি এ দেশের আলেম ও ইসলামপন্থীদের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। বিভিন্ন ইস্যুতে এক প্ল্যাটফর্মে কাজ করেছি। ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, এমনকি কারাবরণও করেছি। তথাকথিত আল্লামাদের মতো তারা কোনো বেফাঁস মন্তব্য, ওয়াজ, অপব্যাখ্যা বা আচরণ করেননি। এখনকার কিছু পীর দর মরহুম পিতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ১০-১২ বছরব্যাপী প্রচারে লিপ্ত দুনিয়ার লোভে, ক্ষমতার লোভে বিবেকহীন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। বন্ধুরা আমরা শেখ হাসিনার সরকারকে দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে ও ধর্মের স্বার্থে অব্যাহত সমর্থন দিচ্ছি।
তিনি বলেন, এ সরকার থেকে কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা করিনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৫ বছরব্যাপী সরকারের দায়িত্ব পালন করছেন। মহাজোট গঠনের পূর্বে ২০০৪ সাল ও পরবর্তীতে তিনি আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার একটিও তিনি রাখেননি। তবে এ কথাগুলো তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে কখনো বিরক্ত করতে চাইনি। আমাদের ছাড়া সবার সঙ্গে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। আমার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামিক ঐক্য জোট বঙ্গবন্ধু কন্যার চরম দুর্দিনে সঙ্গে ছিলাম, এখনো আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব ইন শা আল্লাহ। প্রতিটি ক্রান্তিকালে তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম এবং দাঁড়াব। তবে তার সরকারের ভুল ত্রুটির কথা বলতে আমরা কখনো তোয়াক্কা করিনি।
মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, দেশপ্রেমিক স্বাধীনতার সপক্ষে সমমনা রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ওলামা শায়েখ ও তরিকত পন্থীদের নিয়ে আমরা একটি জোট গঠনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। শিগগিরই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে ইন শা আল্লাহ। বাংলাদেশ ইসলামিক ঐক্য জোট মনে করে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশের নির্বাচন হবে। দেশবাসী কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবে না। সব রাজনৈতিক দল আলাপ আলোচনা করে সংবিধান রক্ষা করে একটি নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম হবে।
মিছবাহুর রহমান চৌধুরী আরও বলেন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তা নয়, বরং তাদের ষড়যন্ত্র দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে ও দেশের বিরুদ্ধে। আমাদের গৌরব আমাদের প্রিয় সেনাবাহিনী যখন সারা বিশ্বে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দেশের গৌরব বয়ে আনছেন, তখন দেশের ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্ন এনজিও গোষ্ঠীর মাধ্যমে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সরকারের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা এক শ্রেণির লোকজন এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
চেয়ারম্যান বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা ঈদুল আজহার পর দেশব্যাপী নাশকতা শুরু করার পরিকল্পনা করছেন। হত্যা, রাহাজানি, আগুন সন্ত্রাস করে দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করছেন। ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের মিশন বাস্তবায়নে কিছু বলির পাঁঠাকে ব্যবহার করে আসল কুশলীরা নেপথ্যে থেকে তাদের মিশন বাস্তবায়নের ছক এঁকেছেন। দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তা নয় বরং দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধেও মিথ্যাচার করে তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
এমআই/এফকে