>> কথার বাহাসে জড়ালেন শাহজাহান খান ও বাহাউদ্দিন নাছিম
>> কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া কোনো কমিটি ভাঙা যাবে না
>> নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর নির্দেশ
>> ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নয়ন প্রচার করতে হবে
>> বিএনপি-জামায়াতে অপকর্ম তুলে ধরতে হবে

আগামী নির্বাচনের আগে নতুন করে আওয়ামী লীগের কোনো শাখার সম্মেলন হবে না। তবে যেসব স্থানে পূর্বেই তারিখ চূড়ান্ত ছিল শুধুমাত্র সেই শাখাগুলোর সম্মেলন হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর কেন্দ্রের নির্দেশনা ছাড়া জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কোনো কমিটি ভাঙা যাবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকালে গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এসব  নির্দেশনা দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। তারপর আওয়ামী লীগের চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ৮ সাংগঠনিক সম্পাদক বক্তব্য রাখেন। তারা নিজেদের সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক সদস্যসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অনেকেই বক্তব্য রাখেন। 

বৈঠক অংশ নেওয়া একাধিক নেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংগঠনকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ভুলে যেতে হবে। নিজেরা দ্বন্দ্বে লেগে থাকলে দলের জন্য সমস্যা হবে। আগামী নির্বাচনের পূর্বে নিজেদের সকল দ্বন্দ্ব মেটাতে হবে।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আমরা অনেক উন্নয়ন করেছি, সেগুলো মানুষের মাঝে তুলে ধরতে হবে। আওয়ামী লীগ বাদে অন্য কেউ ক্ষমতা আসলে উন্নয়ন এবং দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশ বিরোধী, খুনি, মৌলবাদী চক্র, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আমলে মানুষের উপর যে অত্যাচার, নির্যাতন, দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য করেছে সেগুলো আবার মানুষের মাঝে তুলে ধরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানুষ অনেক কিছু ভুলে গেছে, সেগুলো নতুন করে তুলে ধরতে হবে। কোন দেশে মামলা হয়েছে, কী কারণে মামলা হয়েছে, সব কিছু মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান খানের সঙ্গে বাহাউদ্দিন নাছিমের কথার বাহাস চলছিল। প্রথমে প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান খান শুরু করেন। পরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম দলের সভাপতির অনুমতি নিয়ে শাহজাহান খানের কথার জবাব দেন। একজন অভিযোগ তুললে আরেকজন তার জবাব দেন। সবই ছিল মাদারীপুরের রাজনীতি নিয়ে।
 
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাহাউদ্দিন নাছিমের উদ্দেশে বলেন, তুমি এবং দাদা ভাই (লিটন চৌধুরীর পিতা ইলিয়াস চৌধুরী) শাহজাহান খানকে আওয়ামী লীগে নেওয়ার জন্য আমাকে বলেছিলে। সারাক্ষণ অনুরোধ করেছিলে। এখন মিলেমিশে কাজ করার সময়। এখন ঝগড়াঝাঁটি করার সময় নয়। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা উপলক্ষ্যে গণভবনে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। সেখানে গণভবনের উৎপাদিত বিভিন্ন সবজি ও ইলিশ দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।  

এমএসআই/এসকেডি