নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আমরা ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ গণতন্ত্রের জন্যই লড়াই করছি। সেই গণতন্ত্র যে গণতন্ত্র গরিবের পেটে ভাত দেবে তার অধিকার নিশ্চিত করবে, তার আইনি সম্মান দেবে, নাগরিক হিসেবে তার সম্মান রাখবে। এটার পক্ষেই আমরা ঢাকা থেকে দিনাজপুর রোডমার্চ করেছি। খেয়াল করে দেখেন প্রায় জায়গায় সরকার বাধা দিয়েছে। তারা শান্তির নামে অশান্তি সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশে অশান্তির আগুন জ্বালিয়েছে এই সরকার। চাল, ডাল, আদা, রসুন, পেঁয়াজ সব কিছুর দাম বাড়ানো হয়েছে। কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে পারে না। তারা বিদ্যুতের দাম বাড়ায় কিন্তু বিদ্যুৎও দিতে পারে না। সামনে কোরবানি ঈদ আল্লাহ জানে কী পরিস্থিতি হবে। সমস্ত দিকে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। শুধুমাত্র গায়ের জোরে ভোটের নাম করে ভোট ডাকাতি করে নিজেদের জায়গা ধরে রাখতেই তাদের আয়োজন।

সোমবার (১২ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সারাদেশে রোডমার্চে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, হঠাৎ করে সরকারের বোধোদয় হলো ওদেরকে (জামায়াত) গণতান্ত্রিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত করে সভা করবার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। এটা তিনদিন পর বোঝেন নাই, তিন মাস পর বোঝেন নাই, তিন বছর পরও বোঝেন নাই। এখন ষড়যন্ত্র করতে তাদের সভা করবার অনুমতি দেয়। তাও আবার কি সরকারি দলের সভা বাতিল করে ওই জায়গায় জামায়েত ইসলামীকে সভা করবার অনুমতি দেওয়া হলো। তারপর মন্ত্রীরা বলতে শুরু করল বিএনপি উসকানি দিচ্ছে। এটা একটা ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্র তারাই করছে। তারা একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে, তার দায় এদের ওপরে চাপাবে, বিরোধীদলের ওপর চাপাবে। 

সরকার সাপের মুখেও চুমু খাচ্ছে, ব্যাঙের মুখেও চুমু খাচ্ছে মন্তব্য করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন- রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে নাকি জামায়াতে ইসলামীকে মাঠে নামিয়েছে। সমীকরণটা খুবই পরিষ্কার একদিকে বলছে যুদ্ধাপরাধীদের জন্য নাকি আইন তারা তৈরি করছে, মন্ত্রিপরিষদে আইন উঠবে। আগামী পার্লামেন্ট যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আইন নাকি তারা করবে। অন্যদিকে জিএম কাদেরের এরশাদের জাতীয় পার্টির যুব সংঘটির একটা প্রোগ্রাম ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে। রাত ১২টার সময় তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলেছে। কি এত ভালোবাসা জন্ম নিল? এতদিন তারা বলে এসেছে যুদ্ধ পরাজিত দল এখন আইনমন্ত্রী বলছেন আইনে সাজা না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না যে তারা যুদ্ধাপরাধী।

সভাপতির বক্তব্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, আগামী ১৯ জুন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সামনে আমাদের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা প্রেস ক্লাব শুরু করে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত তা বিস্তৃত করব। ঈদের পর আমরা আরও কঠোর আন্দোলন করব, রোডমার্চ করব। আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত করব। 

অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বায়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।

/এমএইচএন/এমএ