বাংলাদেশের অর্থনীতি অতি দ্রুত রসাতলে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, শুধু মাত্র সরকার গলার জোরে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো আছে। দেশে তারা একটা উন্নয়ন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।

সোমবার (২২ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভার আয়োজন করে এ্যাব।

>>সিটি নির্বাচনও নীল নকশার হবে : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব বলেন, উন্নয়নের রেখাগুলো দেখলে বোঝা যায়, তারা কিভাবে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। গোটা বিশ্বকে বোকা বানাচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল! আগামী বছর থেকে যখন ঋণ পরিশোধ শুরু হবে তখন এটা এত দ্রুত নিচের দিকে নামবে যে, তখন এটা হয়ে যাবে ব্যর্থ রাষ্ট্রের রোল মডেল।  

তিনি বলেন, এই সরকার বিদ্যুৎ খাতকে আলাদা করে নিয়েছে, কারণ এখানে লুটপাটের সুবিধা বেশি। কুইক রেন্টালের চার্জ দিতে গিয়ে বাংলাদেশকে আগামী বছর থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ করতে হবে। ক্যাপাসিটি চার্জ তো আছেই, এটার জন্য প্রতি বছর সম্ভবত ৭৮ হাজার কোটি টাকা গচ্ছা দিতে হয়। এটা একটা ভয়াবহ প্রক্রিয়া যেটা, বাংলাদেশকে এতো বেশি ঋণের বোঝা হয়ে দাঁড়াবে, যেটা আমাদের পক্ষে বহন করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।

>>এখন দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ : ফখরুল

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা নয়, গতকাল ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আরেকটি রিপোর্ট বেরিয়েছে- সেখানে তারা পরিষ্কার করে বলছে, মধ্য আয়ের দেশ বলে সরকার যে বাহবা নিচ্ছে যে, ‌‌‘আমরা মধ্য আয়ের দেশে পৌঁছে গেছি।’ বিশ্বব্যাংক তার রিপোর্টে বলছে, এটি মধ্য আয়ের দেশ থাকবে না, যদি তার পলিসিগত পরিবর্তন করা না যায়। দুর্নীতি বন্ধ করা না যায় এবং সংস্কার না করা যায়। দুর্ভাগ্যজনক গত ১২ বছরে অর্থনীতি খাতে কোনো সংস্কার হয়নি। যেটা হয়েছে, লুটপাটের জন্য বিভিন্ন আইন, নিয়ম ও নীতি তারা করেছে। যার একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে লুটপাট করা।

মির্জা ফখরুল বলেন, ছোটবেলায় মায়ের কাছে শুনতাম- ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বর্গী এলো দেশে। বর্গী কারা? যারা বার্মা থেকে এসে সেই সময়ে বাংলাদেশে ঢুকতো, গ্রামের পর গ্রাম লুট করে নিয়ে যেতো। এই বর্গীর মতো আওয়ামী লীগ দেশে লুটপাটতন্ত্র কায়েম করছে। এটা শুধু আমাদের কথা নয়, প্রত্যেক অর্থনীতিবিধ, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যারা লগ্নি কিংবা ঋণ দিয়ে থাকে তারা প্রত্যেকে বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যদি লুটপাঠ বন্ধ না হয়, নীতিগত পরিবর্তন না হয় তাহলে অতি শিগগিরই বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ থেকে পড়ে যাবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী হাছিন আহমেদ, প্রেকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমুখ।

এএইচআর/এমএ/