‘আই হেট পলিটিক্স’ না বলার জন্য তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা। তারা বলেন, নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র নেতৃত্ব বিকাশে দ্রুত ছাত্র সংসদের নির্বাচন দিতে হবে।

শুক্রবার (১৯ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রাজনৈতিক আলাপ চলবে’ শীর্ষক তারুণ্য মেলা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তারা। মাল্টি-পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম ঢাকার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ মেলার অর্থায়ন করেন ইউএসএআইডি।

এতে তিতুমীর কলেজ, ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও ছাত্র সমাজের ৭৫ জন তরুণ নেতা এবং ৭৫ জন তরুণ শিক্ষার্থী অংশ নেন। তাদের নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা এবং বিতর্ক অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়।

তারুণ্যের মেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তিনজন কেন্দ্রীয় নেতা অংশ নেন।

এতে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহম্মদ রাজু বলেন, সবার আগে দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে, তা না হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে কীভাবে?

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র নেতৃত্ব বিকাশে দ্রুত ছাত্র সংসদের নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

রাজনৈতিক দলগুলোতে পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন উল্লেখ করে রাজু বলে, জাপা চেয়ারম্যান সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা বিভিন্ন সময় যুবকদের নিজ স্বার্থে ব্যবহার করি, তারুণ্যের শক্তিকে আমরা ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি না বলেই তারা রাজনীতি বিমুখ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের অক্সিজেন হলো রাজনীতি, রাজনীতির অক্সিজেন হলো গণতন্ত্র, গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হলে রাজনীতি তথা দেশে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হয়।

এ জন্য তিনি রাজনীতিবিদদের হাতে হাত ধরে চলার তাগিদ দেন।

রাজনীতির ভালো দিক আছে, খারাপ দিকও আছে উল্লেখ করে প্রিন্স ‘আই হেট পলিটিক্স’ না বলার জন্য তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান।

জাতির পিতা সবসময় তারুণ্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হলো তরুণরা, এরপরের ধাপ হলো স্মার্ট বাংলাদেশ।

নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মতাদর্শের অমিল থাকলেও দেশের স্বার্থে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসনের, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ প্রশ্নে সবাইকে এক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, তরুণদের জন্য আমরা আজ তিনটি দল এক মঞ্চে একত্রিত হয়েছি, এটাই গণতন্ত্র। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় মাল্টি পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করায় ধন্যবাদ। আগামীতে আমরা এ ধরনের অনুষ্ঠান নিজেরাই করব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ড্যানা এল. ওলডস্ আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের প্রোগ্রাম একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল যে, ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শ হলেও এভাবে সহবস্থান সম্ভব।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাল্টি পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নুরজাহান আকতার সবুজ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদিয়া পাঠান পাপন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন মাল্টি পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের ঢাকার সভাপতি তানভীর আহমেদ। এছাড়া ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র কমিউনিকেশন ম্যানেজার আরাফাত সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।

এএইচআর/এসকেডি