আচরণ বিধি মানা হচ্ছে না পাঁচ সিটিতে, অভিযোগ জাপার
পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণ বিধি মানা হচ্ছে না বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে অভিযোগ করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
সোমবার (১৫ মে) জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘জাপার পক্ষ থেকে একটা টিম আসছিলাম। পাঁচ সিটি ভোটে আমরা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। সেগুলো সুরাহা করার জন্য এসেছি এবং গাইবান্ধার ভোট নিয়ে কিছু কথা ছিল। সেগুলোও বলার জন্য এসেছিলাম। আমাদের সঙ্গে কথা বলার সময় সিইসি, একজন কমিশনার ও সচিব সাহেব ছিলেন।’
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘সিলেটে একজন প্রার্থী রাস্তা দখল করে মঞ্চ বানিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। গত ১২ মে ভোট চেয়েছে, আমরা এটার প্রমাণ দিয়েছি। বরিশালের রিটার্নিং কর্মকর্তার বাজে ব্যবহারের এবং পক্ষপাতমূলক আচরণের বিষয়টিও তুলেছেন তারা। সিইসি বলেছেন তদন্ত করে দেখবেন। ইভিএমে পাঁচ সিটি ভোট না করার দাবি ছিল আমাদের। ইভিএম ভালো হলেও মানুষের ধারণা কিন্তু ভালো না। সিটি ভোটগুলো যাতে দলীয় প্রভাবমুক্ত হয়ে একটা ভালো পরিবেশের মানুষ যাতে নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতে পারে এবং মানুষ দেওয়ার জন্য যেতে পারে, যাতে অনিয়ম না হয়। যাতে প্রশাসনকে ব্যবহার করে কোনো দল কোনো সুবিধা নিতে না পারে সে বিষয়টা যাতে নিশ্চিত করেন, সেটাই আমরা বলেছি। ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হলে আমরা আসতাম না। ভালো নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি মূলত ইসির দায়িত্ব, রাজনৈতিক দলেরও আছে। প্রার্থীদেরও আছে, যারা ক্ষমতায় আছেন তাদেরও আছে। কাজেরই সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের মনের মধ্যে একটা শঙ্কা, যে নির্বাচনটা ফ্রি, ফেয়ার হয় কিনা। রাতারাতি ইসিও কিছু করতে পারবে না। তবে সদিচ্ছা, সাহস যদি থাকে, সেই সাহস দেওয়ার জন্যই আমরা আসছি। ইসির প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আছে বলেই তো আসছি তাদের সহযোগিতা করতে এবং সহযোগিতা নিতে।’
চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন যে জাপা সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে থাকে। স্থানীয় সরকারের গত ইউপি নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করেছিলাম, সেখানে শাসক দলের প্রার্থীরা অনেক জায়গায় আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে, জোর জবরদস্তি করেছে। সেই সময় যারা নির্বাচন কমিশনে ছিলেন, তারা তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। ইভেন গাইবান্ধার উপ-নির্বাচনের সময় আমাদের প্রার্থী ছিল শক্তিশালী এবং একটা পর্যায়ে নির্বাচনটা বাতিল করা হয়েছিল। বাতিল করার পর ইসি থেকে তদন্ত করা হলো যে, কারচুপি কারা করেছিল বিশেষ করে ইভিএমে কারা কারা সহায়তা করে নির্বাচনটা প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল। এগুলো নিয়ে তদন্তের পর রিপোর্টও হয়। যারা অনিয়মের জড়িত ছিল তাদের বিষয়ে জানতে পেরেছি কিন্তু যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিষয়টি আজও জানতে পারিনি। এটা আমরা কমিশনকে আজকে বলেছি। শাস্তিমূলক বিষয়গুলো যদি দৃশ্যমান না হয়, জনগণ যদি জানতে না পারে তাহলে তো আস্থাটা আসবে না।’
আইন অনুযায়ী যারা জড়িত তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন সিইসি। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা উনি জানেন না বলে উল্লেখ করেন জাপা মহাসচিব।
তিনি বলেন, ভোটের সময় ইসির কথা না শুনলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে না গিয়ে নিজেরাই যেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন সেই আইনের জন্য বারবার বলেছি। সেই আইনটা করলে ইসিই ব্যবস্থা নিতে পারতো।
এসআর/এমএ