রাষ্ট্র আমলাদের হাতে বন্দি : মেনন
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেননের মতে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাষ্ট্র সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে বন্দি হয়ে গেছে। পাশাপাশি দারিদ্র্যসীমা ও বৈষম্যের ফারাক তুলনাহীন জায়গায় চলে গেছে বলেও মনে করেন তিনি।
রোববার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর মহাখালীতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে গবেষণা পত্র উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও শামীম আলম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
আরও পড়ুন>>সামাজিক ভাতার ১৫০০ কোটি টাকা খাচ্ছে অযোগ্যরা
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সোশ্যাল সেফটি কোনো দান বা খয়রাত নয়। এটা অধিকার। সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে শুরু হয়েছিল। বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৫ সালে ভাতার প্রচলন শুরু হয়। এটাকে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি হিসেবে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। দারিদ্র্যসীমা কমিয়ে আনতে পারলেও বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়ে তা তুলনাহীন জায়গায় চলে গেছে। বৈষম্যের বিষয়টি অনেকে স্বীকার করতে চায় না। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে আমাদের রাষ্ট্র সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে বন্দি হয়ে গেছে। দারিদ্র্যসীমা ও বৈষম্যের ফারাক অনেক বেশি হয়ে গেছে।’
‘সামাজিক নিরাপত্তার পরিমাণ ও বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তার মধ্যে সরকারি পেনশনকে অন্তর্ভুক্ত করে বড় বরাদ্দ দেখানো হয়। আমরা এটাকে বাদ দেওয়ার জন্য বললেও তা করা হয়নি। তবে এবার আইএমএফ সেটা আবারও বলেছে। এতে সরকার হয়তো এবার শুনবে। কারণ আমরা বিদেশিদের কথা ভালো শুনি। আজকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বৃদ্ধিতে সিপিডি যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা যৌক্তিক। সামাজিক ভাতা পাওয়ার ব্যাপারে যোগ্য ব্যক্তি শনাক্তকরণে দুর্নীতি রয়েছে। তবে মনিটরিং করার জন্য সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের পর্যাপ্ত লোকবল সংকট রয়েছে।’
আরও পড়ুন>>আন্তর্জাতিক বহু কোম্পানি কর দেয় না : সিপিডি
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘নগরের অভাবগ্রস্তরা কারও নজরে আসে না। হরিজনদের ক্যাম্পে গেলে প্রকৃত চিত্র দেখতে পাবেন। নগরের অভাবগ্রস্তদের আমরা খেয়ালই করি না। ঢাকা শহরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মাঠ দখল হয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের অবস্থা কী? এই জায়গায় গবেষণা প্রয়োজন। ২০১৫ সাল থেকে এখনও প্রাথমিক শিক্ষায় উপবৃত্তি ১৫০ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছি। বিষয়টি কি কারও নজরে আসে না?’
তিনি বলেন, ‘সিপিডি দেখিয়েছে কীভাবে টাকাগুলো আসতে পারে। কেন কর ফাঁকি রোধ করা হচ্ছে না? কেন শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ছে না? কোভিডের কারণে যারা ঝরে গেল, তাদের কি খাতা থেকে বাদ দিয়ে দিলাম! ৪৭ হাজার ছাত্র-ছাত্রী যারা শিশুশ্রম ও বাল্য বিবাহের স্বীকার তাদের কেন উপবৃত্তি থেকে বাদ দেওয়া হলো? তাদের কেন ফিরিয়ে আনা গেল না সেটাই বড় প্রশ্ন।’
অনুষ্ঠানে দুর্নীতি কমিয়ে জরিপের মাধ্যমে যোগ্য অ-সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে ভাতার আওতা বাড়ানোর দাবি জানায় সিপিডি।
আরএম/কেএ