‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মির্জা ফখরুল
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কোন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন? যার কোনও কিছু করার ক্ষমতা নেই। রাষ্ট্রপতির আসনটা সম্মানের, আমরা সম্মান করি, যিনিই রাষ্ট্রপতি আসুক। তিনি কি অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বাইরে গিয়ে আইন তৈরি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারবেন?
মির্জা ফখরুল বলেন, যে কারণে আমরা আমাদের ২৭ দফা রূপরেখা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার কথা বলেছি। ভারসাম্য আনতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। গণতন্ত্র হত্যা দিবস, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ১০ দফা দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর বিএনপি।
আওয়ামী লীগ বাঙালির সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, পত্র-পত্রিকায় খুব লেখালেখি হচ্ছে পাঠ্যবই নিয়ে। পাঠ্যবইয়ে কী আছে? আমাদের চিন্তার বাইরের জিনিসগুলোকে তারা আনছে। আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে যেগুলো মেলে না, সেইগুলো তারা নিয়ে এসেছে। যাতে করে সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, পাঠ্যবইয়ে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে আসতে হবে। নতুন করে পাঠ্যবই রচনা করতে হবে।
খালেদা জিয়াকে সরকার ৪ বছর ধরে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রেখেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আর হাজি সেলিমকে জামিনে দিয়ে দিচ্ছে। ক্যাসিনো সম্রাটকে জামিন দিয়েছে। খুন করেছে, খুনের সাজা হয়েছে, তাদের জামিন দিয়ে দিচ্ছে।
আওয়ামী লীগ এমনি-এমনি ক্ষমতা থেকে যাবে না উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাতে হবে। দেশের জনগণ প্রতিদিন আন্দোলনে জড়ো হচ্ছেন। আন্দোলন চলমান, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আন্দোলনে জয়ী হবো।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সময় শেষ হয়ে গেছে। এদের যেতে হবে। যারা গণতান্ত্রিক লড়াই সংগ্রামে হত্যা-গুম-খুন নির্যাতন ও কারাগারে প্রেরণ করেছে তাদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে অবশ্যই আওয়ামী লীগকে যেতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে ছদ্মবেশী বাকশাল দিয়েছে। এখন আবার নির্বাচনী তামাশা নাটক তৈরি করে আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এই দেশের মানুষ এদের সেই নির্বাচন করতে দেবে না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। এরা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু কাজ করে উল্টো। আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে সন্ত্রাসের। এরা সন্ত্রাস করে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পাঠ্যপুস্তকে সংস্কৃতি ঐতিহ্য মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ও বর্তমান অনির্বাচিত সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, জ্বালানি কোনও কিছুর দাম কমাবে না। এদের সরাতে হবে। বিদায় করতে হবে। আমাদের পবিত্র দায়িত্ব জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিকালের দিকে কারামুক্ত হয়ে সমাবেশে যোগ দেন খায়রুল কবির খোকন ও ফজলুল হক মিলন।
এএইচআর/এসএম