‘অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার অথবা জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন’ এবং ‘রাষ্ট্র মেরামতে জাতীয় ঐকমত্য’ — এই দুই দফা দাবিতে আগামী ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টি।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) বিজয় নগরে দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যুগপৎ নয়, স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে দুই দফা দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবি পার্টি। বিজয়ের মাসে সারা দেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা, খুন, গণগ্রেপ্তার, ঢাকার মহসমাবেশকে ঘিরে রাজধানীকে অবরুদ্ধ করার প্রয়াস কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সরকার দলীয় নেতারা ‘খেলা হবে’, ‘খেলা হবে’ বলে যে উসকানি দিচ্ছেন তার ফল আমরা সারা দেশে দেখতে পাচ্ছি।

বিএনপির ১০ দফা ও ২৭ দফাকে স্বাগত জানিয়ে মজিবুর রহমান মন্জু বলেন, মূলত এই মুহূর্তে দেশের মানুষের মৌলিক দাবি দুটি। একটি হলো স্বৈরশাসন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে এই সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সেই সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। প্রয়োজনে এই নির্বাচন জাতিসংঘের অধীনে করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি। দ্বিতীয়টি হলো, বাংলাদেশ রাষ্ট্র মেরামত করার জন্য একটি ঐকমত্যের রূপরেখা, যা হবে সব দলের সম্মতিতে একটি জাতীয় অঙ্গীকার এবং তা হতে হবে অলঙ্ঘনীয়।

তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে কিশোর বিদ্রোহ, ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন— এসব মুক্তিসংগ্রামের ঐতিহাসিক পথ ধরে দেশের জনগণ আজ আবারও শোষক ও শোষিত দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে যে আওয়ামী লীগ আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিল, সেই আওয়ামী লীগ আজ বাংলাদেশে ভয়ংকর শোষক আকারে হাজির হয়ে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। যেই শোষক ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সমগ্র শোষিতরা দলমত নির্বিশেষে আজ আবার ঐক্যবদ্ধ।

দলের আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, গত ১৪ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসন আজ দেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে ঠেকিয়েছে। দুঃশাসন, আর্থিক খাতে অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও লুটপাটে দেশের মানুষের আজ নাকাল অবস্থা। ২০১৪ সাল থেকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না থাকার কারণে রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে আজ জবাবদিহিতাহীন ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। রাজনৈতিক এই অচলায়তনের দায় একমাত্র সরকারি দলের।

সংবাদ সম্মেলন থেকে গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে প্রকৌশলী এবং একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান ম ইনামুল হকের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। তাকে দৈহিকভাবে নাজেহাল করাকে দেশের জন্য চরম লজ্জা ও কলঙ্কজনক উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। গুমের শিকার একজনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটানো হয়েছে সেটিকে শুভ লক্ষণ নয় বলে পার্টির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, গোলাম ফারুক ও আনিছুর রহমান কচি প্রমুখ।

/এমএইচএন/এসএসএইচ/