জানাজার সময় বিএনপি নেতার ডান্ডাবেড়ি খুলে দিলে ভালো হতো
গতকাল মঙ্গলবার গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাতকড়া আর ডান্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজা পড়তে হয় বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার থাকা বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী আজমকে। মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি মিললেও জানাজা পড়ার সময় তার হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দেয়নি পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গতকাল ও আজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদও প্রকাশিত হয়।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওই ঘটনায় তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে মন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি, জানাজার সময় তার হাতকড়া-ডাণ্ডাবেড়ি খুলে দিলে ভালো হতো।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন>> হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজা পড়লেন বিএনপি নেতা
বার্ধক্যজনিত কারণে গত রোববার বিকেলে আলী আজমের মা সাহেরা বেগম মৃত্যুবরণ করেন।
শেষবার মাকে দেখতে এবং মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম। কিন্তু ওই দিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে তিন ঘণ্টার জন্য মুক্তি মেলে তার।
বেলা ১১টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা ও দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় আলী আজমকে। পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি।
এ ঘটনা তুলে ধরে এক সাংবাদিক তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, জানাজার সময় হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি থাকার ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, সরকার এতটা ‘অমানবিক’ না হলেও পারত।
আরও পড়ুন>>পাকিস্তান আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে : তথ্যমন্ত্রী
জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি বিষয়টি চেক করে দেখেছি। আমি গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ডান্ডাবেড়ি বা হাতকড়া পরানো না পরানো জেল প্রশাসনের কাজ, সেটি পুলিশের কাজ নয়।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে। তাদের বিষয়ে যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল, সেটি করা হয়নি বিধায় তারা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এজন্য গাজীপুরে জেল প্রশাসন অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছে। আমি এসপি পর্যায়েও কথা বলেছি, তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা বিএনপি নেতাকে ক্যারি (বহন) করে এনেছিলেন, শুধু তারাই জানতেন; অন্যরা কেউ জানতেন না। তবে আমি মনে করি, জানাজার সময় তার ডান্ডাবেড়ি এবং হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো।
বিএনপি ক্ষমতায় এলে আ.লীগের কেউ রেহাই পাবে না : তথ্যমন্ত্রী
উল্লেখ্য, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় গত ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করা হয়। মামলায় আলী আজমসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ১৫০ জনকে। ওই মামলায় ২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় আলী আজমকে। মামলাটি ‘গায়েবি’ বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি।
জানাজার সময়ও আলী আজমের হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে না দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার কালিয়াকৈর উপজেলা শাখার সভাপতি শাহজাহান মিয়া বুধবার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মানবিক দৃষ্টিতে বিষয়টি খুবই দৃষ্টিকটু। তিনি কোনো দাগি আসামি নন বলে শুনেছি। তাই তাকে হাতকড়া বা ডান্ডাবেড়ি না পরিয়ে জানাজায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে পারত পুলিশ।’
এসএইচআর/কেএ/জেএস