নুরদের থাকা নিয়ে সন্দেহ
‘ভোট ডাকাতির বর্ষপূর্তি’র দিন গণমিছিল করবে বিএনপি-গণতন্ত্র মঞ্চ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চতুর্থ বর্ষপূর্তি আগামী ৩০ ডিসেম্বর। দিনটিকে ‘ভোট ডাকাতির বর্ষপূর্তি’ আখ্যা দিয়ে ওইদিন রাজধানীতে গণমিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ। আর এটি হতে যাচ্ছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের প্রথম যুগপৎ কর্মসূচি।
তবে, গণতন্ত্র মঞ্চের এই ঘোষণার সঙ্গে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের থাকা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলছেন, ৩০ ডিসেম্বরের কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ আলাদা-আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেবে। ১৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় গণতন্ত্র মঞ্চ এবং দুপর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করবে বিএনপি।
আরও পড়ুন>>ভোট ডাকাতির সরকারের পতনের বিকল্প নেই : মান্না
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলছেন, আগামী দিনের কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে বিএনপি-গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ে গঠিত হবে লিয়াজোঁ কমিটি। ইতোমধ্যে লিয়াজোঁ কমিটিও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। যা আগামী ৩০ ডিসেম্বরের কর্মসূচির আগে ঘোষণা করা হবে। এই যুগপৎ কর্মসূচিতে গণঅধিকার পরিষদ না থাকতে চাইলে তাদের বাদ দিয়ে লিয়াজোঁ কমিটি করা হবে। তবে, আমরা তাদের নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে চাই। গণতন্ত্র মঞ্চে এবং যুগপৎ আন্দোলনে থাকা, না থাকা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে গণ অধিকার পরিষদের নিজেদের ওপর।
গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, লিয়াজোঁ কমিটিতে মঞ্চের ৭ দলের শীর্ষ ৭ নেতা থাকবেন। আর বিএনপির পক্ষ থেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমদু চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী থাকবেন। এর বাইরে মঞ্চের সঙ্গে লিয়াজোঁ কমিটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল থাকতে পারেন।
আরও পড়ুন>> ৪ লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রস্তুত করা হচ্ছে ‘গণতন্ত্র মঞ্চে’র ভিত্তি
বিএনপির নেতারা বলছেন, বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন সমন্বয় করার জন্য গণতন্ত্র মঞ্চের বাইরে আরও একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের যেসব শরিক ছিল তাদের সমন্বয় করবে। এই কমিটিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় থাকবেন। এর বাইরে আরও কয়েকজন থাকবেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনই বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন : ভোটের মাঠে ‘গণতন্ত্র মঞ্চে’র গুরুত্ব নেই : তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের ২৪ ডিসেম্বরের গণমিছিলের কর্মসূচি হচ্ছে না। নতুন করে কোন দিন হবে সেটা আলোচনা করে ঠিক করতে হবে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে গণতন্ত্র মঞ্চের দু’জন শীর্ষ নেতা বলেন, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে করার চতুর্থ বর্ষপূর্তি। এই ‘ভোট ডাকাতির বর্ষপূর্তি’র দিনই বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের প্রথম যুগপৎ কর্মসূচি হিসেবে গণমিছিল হবে। ১৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় সেগুনবাগিচায় নাগরিক ঐক্যের অফিসে গণতন্ত্র মঞ্চের এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এরপর বিএনপি তাদের মতো করে ঘোষণা করবে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ওইদিন গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচি ঘোষণার পর দুপুর ১২টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ২৪ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে। এ জন্য আজ বৃহস্পতিবারের বিএনপির সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, দল হিসেবে আমরা এখনও গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে আছি। আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার ও হামলার শিকার হয়েছে। ফলে, এই মুহূর্তে গণতন্ত্র মঞ্চ যদি যুগপতে যায়, তাহলে হয়তো আমরা একমত হবো না। তাছাড়া এই যুগপৎ কর্মসূচি তো বিএনপির সঙ্গে হবে, তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া ও আলাপ-আলোচনা ছাড়া কোনো যুগপৎ কর্মসূচিতে যাব না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, নুরদের দল যদি আমাদের সঙ্গে আলাদা আলোচনায় বসতে চায় অবশ্যই আমরা তাদের সঙ্গে বসব। এখন যেহেতু তারা গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাই আমরা আলাদা করে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করি না। তারপরও তারা চাইলে আলাদা করে আলোচনা করতে তো আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
এএইচআর/এসএম