আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন ঘিরে আওয়ামী লীগে এখন উৎসবের আমেজ। এ সম্মেলনের মাধ্যমে যত বেশি গতিশীল নেতৃত্ব আসবে, দল তত গতিশীল হবে এবং আগামী নির্বাচনে জয় লাভের ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। 

আসন্ন এই সম্মেলন নিয়ে ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন মাহবুব উল আলম হানিফ। সম্মেলনের আয়োজন, নতুন নেতৃত্ব, বহিষ্কৃত বা অব্যাহতিপত্র পাওয়াদের নিয়ে দলের ভাবনাসহ নানা বিষয় উঠে এসেছে আলাপচারিতায়। এর চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-

ঢাকা পোস্ট : এবারে জাতীয় সম্মেলন সাদামাটার কথা বলছেন, সেই সাদামাটাই কেমন হবে?
মাহবুবউল আলম হানিফ : আমরা বলেছি যে, বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা যাচ্ছে সারা পৃথিবীতে, এই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, সব ক্ষেত্রে সাশ্রয়ীভাবে চলার জন্য, সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। তার মানে এটা নয় যে একেবারে সাদামাটা হবে, সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই। সম্মেলন উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। সারা দেশে এই সংগঠনের কোটি নেতাকর্মী আছে। সারা দেশের মানুষের ভাগ্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। সারা দেশের মানুষের আগ্রহ আছে আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে, সেই সম্মেলন একেবারে সাদামাটা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। উৎসবমুখর পরিবেশে হবে, তবে আমরা সাশ্রয়ীভাবে এই সম্মেলনটা করব। 

আরও পড়ুন : ‘হুমকি’ দেখছে না আ. লীগ, তবু ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার চিন্তা

ঢাকা পোস্ট : দল থেকে বহিষ্কৃত বা অব্যাহতিপত্র পাওয়া নেতারা কাউন্সিল কিংবা ডেলিগেট কার্ড পাবে কি না?
মাহবুবউল আলম হানিফ : আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, যাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ছিল তাদের দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি, কিংবা সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে থাকে, তাকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার মানে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। দলের যে কোনো সদস্যই, যারা আমাদের দলে আছে, যারা কাউন্সিলর হিসেবে ছিল, তারা আসতে পারবে। যদি দল থেকে বহিষ্কৃত করা না হয়ে থাকে তাহলে সে কেন কাউন্সিলর কার্ড পাবে না। সে ডেলিগেট ও কাউন্সিলের কার্ড পাবে।

ঢাকা পোস্ট : ক্ষমতাসীন দল হিসেবে বর্তমানে আওয়ামী লীগের সামনে কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে?
মাহবুবউল আলম হানিফ : আমাদের চ্যালেঞ্জ একটাই, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক যে মন্দা যাচ্ছে, সেটাকে মাথায় রেখেই আমাদের দেশের যে কোনো সংকটকে মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে। এ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির যা কিছু আছে, সব কিছুই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হয়েছে। এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে, এ দেশকে একমাত্র আওয়ামী লীগই এগিয়ে নিতে পারবে। সেই উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের কাজ করা, আমাদের সামনে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, এই মন্দাকে মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের চ্যালেঞ্জ।

ঢাকা পোস্ট : জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে বিদ্রোহীদের ক্ষমা করার ব্যাপারে দলের কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না?
মাহবুবউল আলম হানিফ : আছে। আবেদন করার মাধ্যমে সেই সুযোগ রয়েছে। আবেদন করলেই কেস টু কেস যাচাই-বাছাই করা হবে। যদি দেখা যায় যে, ক্ষমার যোগ্য, তাকে ক্ষমা করা হবে। 

আরও পড়ুন : প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ জয়-লেখক!

ঢাকা পোস্ট : সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব কেমন আসতে পারে বলে মনে করছেন?
মাহবুবউল আলম হানিফ : আমাদের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপরে সারা দেশের কাউন্সিলদের আস্থা যেখানে, সেখানে নতুন করে ভাবনার কিছু নেই। সভাপতির পরের পদের ব্যাপারে কাউন্সিলররা সিদ্ধান্ত নেবেন। কাউন্সিল অধিবেশন বসার পরে কাউন্সিলররা সিদ্ধান্ত নেবে।

ঢাকা পোস্ট : জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় সম্মেলন, এই সম্মেলন দলীয় ভাবে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে?
মাহবুব উল আলম হানিফ : এটা (জাতীয় সম্মেলন) অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়, আওয়ামী লীগের ওপরে মানুষের আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকুক জনগণ সেটা চায়। সার্বিকভাবে যত বেশি গতিশীল নেতৃত্ব আসবে, দল তত গতিশীল হবে এবং সেটা আগামী নির্বাচনে জয় লাভ করার ক্ষেত্রে একটা ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে। 

এমআইএস/এনএফ