‘দেশে আইনের শাসন ফিরলে আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার হবে’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির জন্ম গণতন্ত্রকে মাথায় রেখে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের আস্থায় রেখে বিএনপি পথ চলছে। বিএনপি কেন আগুন নিয়ে খেলবে? বিএনপির সঙ্গে তো জনগণ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু অতীতে কারা আগুন নিয়ে খেলেছে, কীভাবে খেলেছে, সবই আমরা জানি। দেশে গণতান্ত্রিক সরকার ও আইনের শাসন ফিরে আসলে আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার করা হবে। গুম, খুন ও ক্রসফায়ার বা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে যারা হত্যা করেছে তাদেরও বিচার হবে। যারা পঙ্গু করেছে ও দশ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে তাদের বিচার হবে। এছাড়া যারা শেয়ার বাজার লুট করেছে তাদেরও বিচার হবে। অবশ্য কোনো ক্যাঙ্গারু কোর্টে এসবের বিচার হবে না।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যেই জিয়াউর রহমান দেশের বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব সংস্কার এবং উন্নয়ন করেছিলেন। আর এটাই জিয়াউর রহমানের বড় বৈশিষ্ট্য। তার সঙ্গে অন্য কোনো রাজনীতিবিদের তুলনা হয় না। তার মতো সংস্কার দেশের কোনো শাসক করেনি। সব শাসক এক জায়গায় করলেও কেউ তার সমান হবে না। জিয়াউর রহমান সম্মুখভাগে যুদ্ধ করেছেন, সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধকালে নেতৃত্ব দিয়েছেন, দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আসলে তার সঙ্গে তো আর কারও তুলনা হয় না।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বাদ কিন্তু জিয়াউর রহমান দিয়েছেন। যে চিন্তা ও আকাঙ্ক্ষা থেকে যুদ্ধ হয়েছিলো তার স্বাদ কিন্তু ৭ নভেম্বরের উত্থানের পরই জাতি পেয়েছে। এরপরই বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই দেশের উন্নয়নের সূচনা লাভ করে। জিয়াউর রহমান মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন, দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। দেশের সবচেয়ে মেধাবীদের নিয়ে তার মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিলো। তিনিই দেশে মেধাবী রাজনীতি শুরু করেছিলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার পরবর্তী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই মেধাভিত্তিক রাজনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে। এজন্যই বিএনপি দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের কথা বলছে। যারা পেশীশক্তি দিয়ে রাজনীতি করতে পারে না, অর্থ নেই কিন্তু মেধা আছে, তারা তো সমাজেরই অংশ। তাদেরকে নিয়েও আমাদের আপার-লোয়ার হাউজভিত্তিক সংসদ গঠন করা হবে। এতে বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতিতে মেধাবীদের সমন্বয় ঘটবে। এক্ষেত্রে পেশাজীবীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকে দেশ শেখ হাসিনা যেখানে নিয়ে গেছে, সেখান থেকে বের হতে হলে নতুন নতুন চিন্তা করতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে বিভ্রান্ত করতে চায়। কিন্তু আমরা সেদিকে গুরুত্ব দেই না, শুধু নির্ভয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি, সবাই এগিয়ে যান। বিএনপি কোনো আগুন সন্ত্রাস করে না, এটা হচ্ছে ষড়যন্ত্রমূলক কথা। অতীতে যেভাবে বিএনপির গায়ে কলঙ্ক লাগানোর চেষ্টা করেছে, বর্তমানে আগুন সন্ত্রাস নিয়ে সেই নাটক হচ্ছে। বিএনপি ভদ্রলোকের দল, তারা লগি-বৈঠা চেনেন না, ক্রসফায়ার চেনে না, মিথ্যা মামলা কী তা জানে না, এসব জানে আওয়ামী লীগ। মূলত তারাই আগুন নিয়ে নাটক করছে।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমুখ।
এমএইচএন/কেএ