যে গাড়িতে দাপিয়ে বেড়াতেন বাবর, সেটি এখন জরাজীর্ণ
২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বে গঠিত হয় জোট সরকার। সেই সরকারে থাকা যে কজন ব্যক্তি প্রবল ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন তাদের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবর অন্যতম। তিনি ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে। তার সময়েই ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়, ১০ ট্রাক অস্ত্র আসে দেশে।
জানা গেছে, দায়িত্বে থাকার সময় প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর যে গাড়ি নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন, সেটি এখন একেবারে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
বিজ্ঞাপন
বাবরের ব্যবহার করা মিতসুবিশি পাজেরো মডেলের গাড়িটি আছে সচিবালয়ে। রোববার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তার গাড়িটি পড়ে আছে অযত্নে। দীর্ঘদিন একই অবস্থায় পড়ে থাকায় গাড়িটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সচিবালয়ের নিরাপত্তায় কর্মরত একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, গাড়িটি লুৎফুজ্জামান বাবর ব্যবহার করতেন। দীর্ঘদিন ধরে গাড়িটি এখানে পড়ে আছে৷ এটি এখন জরাজীর্ণ, ব্যবহারের অনুপযোগী। এ গাড়িসহ অন্যান্য অকেজো গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনার পরও গাড়িগুলো এভাবে পড়ে আছে।
১৯৯১ সালে প্রথমবারের মতো নেত্রকোণা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। যদিও ওই সরকার কয়েক মাসের মধ্যেই ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে আবার বিএনপি ক্ষমতায় এলে লুৎফুজ্জামান বাবরকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও দুদকের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন এক সময়ের প্রবল ক্ষমতাবান এ প্রতিমন্ত্রী।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী। তাদের অনেকে আজও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলায় বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
অন্যদিকে, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ওই মামলায় বাবরের আট বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
এসএইচআর/আরএইচ