গুম-খুনের তদন্তে জাতিসংঘের ভূমিকা চায় গণঅধিকার পরিষদ
ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছে গণঅধিকার পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠকে বিচারবহির্ভূত গুম ও খুনের বিষয়ে অবহিত করে জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাপকালে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে গণঅধিকার পরিষদ।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন :জীবন দিয়ে হলেও দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করব : নুর
পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়গুলো জানানো হয়। গণঅধিকার পরিষদ এর প্রতিনিধি দলে ছিলেন সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান ও ফারুক হাসান।
বৈঠক পরবর্তী পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান সরকারের শাসনামলে গত ১৩ বছরে বাংলাদেশে ৬ শতাধিক মানুষ গুম ও তিন হাজারের বেশি মানুষ বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এসব গুম ও হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা সংঘটিত হলেও আজ অবধি কোনো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। বরং সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমর্থনে সুস্পষ্ট বক্তব্য এসেছে। যা তাদের আরও বেপরোয়া করে তুলেছে।
‘২০২১ সালে কারাগারে লেখক ও উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদ, হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবালকে নির্যাতন করে হত্যা, মোদিবিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তারদের নির্যাতন, শাহবাগ থানায় ছাত্রনেতা রবিউল হাসান, আলামিন আটিয়া, সজল ও নাজমুল করিম সোহাগকে মুখে গামছা বেঁধে অমানবিকভাবে পেটানো, চোখে মরিচ দিয়ে নির্যাতন, এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে ভোলায় পুলিশের গুলি করে দু’জনকে হত্যা, নাটোরে যুবনেতা নুরশাদকে হত্যায় কারো বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাসী হামলা, পুলিশি হামলা-মামলায় সভা-সমাবেশের মতো নাগরিকদের মৌলিক অধিকারও আজ এক চরম হুমকির সম্মুখীন। যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয় উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে দিয়ে ২০১৪ এবং ১৮ এর মতো বিনা ভোটের ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন করে সরকার দেশের বর্তমান সংকট তৈরি করেছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ব্যতীত আগামী নির্বাচন হলে তা দেশে সংঘাত-সহিংসতা বাড়াবে, মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটাবে। এক্ষেত্রে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনে জাতিসংঘও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে বলা হয়, ‘জবাবদিহিতা না থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বেআইনি কর্মকাণ্ড করাচ্ছে সরকার। একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাগরিকদের নির্যাতন, গুম-খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ অশনি সংকেত। গত ১২ আগস্ট নেত্রনিউজে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ‘আয়নাঘরের বন্দী’তে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার গুম এবং নির্যাতনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধু আয়নাঘরের বন্দী নয়, এ সরকারের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত ১৩ বছরে সংগঠিত সব গুম ও বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত চায় গণঅধিকার পরিষদ।’
এইচআর/এমএ