আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিরা ভাড়াটিয়া, রশিদ, হুদা, তারা হচ্ছেন স্রেফ ভাড়াটিয়া খুনি। মূল মাস্টার মাইন্ড পরাশক্তি, বিদেশি শক্তি বাদ দিলে জিয়াউর রহমান এক নম্বর।’

রোববার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

‌‘১৫ আগস্ট জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারী জিয়াসহ অন্যদের খুঁজতে তদন্ত কমিশন চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি। 

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে নিজের নামে স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের উচ্চ বিলাসিতা প্রমাণ হয়। পরে যখন বলা হলো, আপনাকে কে চিনে আপনি ঘোষণা দেওয়ার কে? তখন বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে ঘোষণা দিলেন।

তিনি বলেন, এই যে উচ্চ বিলাস তখন থেকেই খন্দকার মোশতাক, বদরুল হুদা, রশিদ, ফারুক, ডালিম তাদের মধ্যে একটা যোগসূত্র হলো। তারই প্রমাণ হলো ১৯৭৫ সালে, বঙ্গবন্ধু খুন হয়ে সিঁড়িতে পড়ে আছেন, তখন জিয়াউর রহমান সাড়ে চারটার দিকে লাইট জালিয়ে শেভ করছেন, তৈরি হবেন, কারণ তার কাজ, মিশন কমপ্লিট হয়েছে। এখন তাকে যেতে হবে। পরবর্তী কার্যক্রম হাতে নেওয়ার জন্য।
 
লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধুর লাশ সিঁড়িতে পড়ে আছে, জিয়াউর রহমান কিছু দিনের জন্য মোশতাককে ক্ষমতায় দিল, খুনির দায় মুক্তিতে জিয়ার নির্দেশে সংসদে পাঠাল। পরে জিয়াউর রহমান সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করল।

লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে কী এমন ঘটল, যে বাংলাদেশে একটি দল বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের স্লোগান দিয়ে গঠন করা প্রয়োজন হলো? কারা ছিলেন এর পেছনে? কারা নেপথ্যে ছিলেন। সমাজতন্ত্রকে যদি আমরা মনে করি একটা বৈজ্ঞানিক বিষয় তাহলে তার আগে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র হাজির করেছিল কারা?

তিনি বলেন, জাসদের তাত্ত্বিক নেতা সিরাজুল আলম খান বেঁচে আছেন। আরও যারা ছিলেন, তাদের নাম আমি বলছি না। নাম আপনারা সবাই জানেন। তারা মিলে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র করলেন। পরাশক্তির ইন্ধন ছিল নিশ্চয়ই, তা না হলে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনছুর আলীর বাড়ির সামনে জাসদের মিছিল থেকে গুলি বর্ষণ হয় কোন সাহসে?

এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এর আগেও প্রয়াত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন দলে অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। সত্যই অনেক জায়গায় ঢুকেছে। তাদের আমরাই ঢুকিয়েছি, পদ পদবি দিয়েছি, আসন দিয়েছি।

তিনি বলেন, যারা অনুপ্রবেশ করেছে তারাই বলছে আমরা আওয়ামী লীগার, আর যারা আসল আওয়ামী লীগের তাদের বাইরে রেখেছে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যাবে না।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য সৈয়দ আবদুল আওয়াল শামীম, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য শ্রী পবিত্র সরকার, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমেদ, কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, সাংবাদিক আবেদ খান।

এইউএ/এসকেডি